আগামী বছর সরকারি-বেসরকারি স্কুল কোনো শাখায় ৬০ জনের বেশি শিক্ষার্থী রাখতে পারবে না। কোনো স্কুলে কোনো শ্রেণির দুটি শাখা থাকলে প্রতিটিতে ৬০ জন করে মোট ১২০ জন শিক্ষার্থী থাকবে। তাই ভর্তির লটারির তথ্য এন্ট্রির সময় প্রতিটি শাখার বিপরীতে কোনোভাবেই ৬০ জনের বেশি শিক্ষার্থীর চাহিদা না দিতে সরকারি-বেসরকারি স্কুলগুলোকে বলেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর।
আগে সরকারি স্কুলগুলোর প্রতি শাখায় ৬০ জন করে শিক্ষার্থী রাখার বিধান থাকলেও কোনো কোনো স্কুল কিছু শিক্ষার্থী বেশি ভর্তি করাতো। আর বেসরকারি স্কুলগুলোর প্রতিশাখার সর্বোচ্চ শিক্ষার্থীর কোনো বাধা ধরা সংখ্যা ছিলো না।
এদিকে চলতি বছর থেকে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। আগামী বছর অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে এ শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হবে। বেশ কয়েকটি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির যেসব শাখায় ৬০ জনের বেশি শিক্ষার্থী রয়েছেন সেগুলোতে নতুন শিক্ষাক্রমের ক্লাস চালাতে অসুবিধা হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে প্রতি শাখায় ৬০ জন শিক্ষার্থীর সংখ্যা নির্ধারণ করে দেয়া হলো।
জানা গেছে, সব সরকারি স্কুল এবং মহানগরী ও জেলা সদরের বেসরকারি স্কুলগুলোতে আগামী শিক্ষাবর্ষে লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। এজন্য গত মঙ্গলবার থেকে সরকারি-বেসরকারি স্কুলগুলোর শূন্য আসনের চাহিদা অনলাইনে অন্তর্ভুক্তি শুরু হয়েছে। নির্ধারিত লিংকে প্রবেশ করে (gsa.teletalk.com.bd) ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে আগামী ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত শূন্য আসনের চাহিদা দিতে পারবেন সরকারি-বেসরকারি স্কুলগুলোর প্রধান শিক্ষকরা।
ভর্তির শূন্য আসনের চাহিদা দিতে সরকারি-বেসরকারি স্কুলগুলোকে নির্দেশনা দিয়ে আদেশ জারি করেছিলো মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। সে আদেশটি সংশোধন করা হয়েছে। এতে সরকারি-বেসরকারি স্কুলগুলোর কোনো শ্রেণির কোনো শাখার বিপরীতে শিক্ষার্থীর চাহিদার সংখ্যা ৬০ জনের বেশি দেয়া যাবে না বলে জানিয়েছে অধিদপ্তর। গতকাল বুধবার অধিদপ্তরের মাধ্যমিক শাখার পরিচালক অধ্যপক মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন স্বাক্ষরিত এ আদেশটি প্রকাশ করা হয়।
জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমিক শাখার উপপরিচালক মোহাম্মদ আজিজ উদ্দিন দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, ধরুন কোনো হাইস্কুলে দুই শিফট। ওই স্কুল ষষ্ঠ শ্রেণিতে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি করে ক্লাস শুরু করবে। ওই প্রতিষ্ঠানে যদি প্রতিটি শিফটে ক্লাস সিক্সের দুটি করে শাখা থাকে তবে মোট শাখা ৪টি। সে ক্ষেত্রে প্রধান শিক্ষক প্রতিটি শাখার জন্য ৬০ জন শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য শূন্য আসনের চাহিদা লটারির জন্য অন্তর্ভুক্ত করবেন। যেহেতু হাইস্কুলগুলোতে ষষ্ঠ শ্রেণিতে সব নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি হয় তাই ওই প্রতিষ্ঠানটি চারটি শাখার বিপরীতে মোট ২৪০ জনের বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারবে না।
জানতে চাইলে রাজধানীর মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন সিনিয়র শিক্ষক দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, সরকারি স্কুলগুলোতে প্রতি শাখায় ৬০ জন শিক্ষার্থী রাখার প্রচলিত নিয়ম থাকলেও কোনো কোনো স্কুল বেশি ভর্তি করাতো। তবে অধিদপ্তর থেকে ৬০ জনের বেশি শূন্য আসনের চাহিদা না দেয়ার নির্দেশনা দেয়ায় তা বন্ধ হবে।
রাজধানীর বিটিসিএল আইডিয়াল স্কুলের প্রধান শিক্ষক মজিবুর রহমান বাবুল দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, বেসরকারি স্কুলের কোনো শাখায় সর্বোচ্চ শিক্ষার্থীর সংখ্যা আগে নির্ধারিত ছিলো না। তাই ভিকারুননিসা-আইডিয়ালের মতো নামিদামি স্কুলগুলো সে সুযোগ কাজ লাগিয়ে ৭৫ থেকে ৮০ জন পর্যন্ত শিক্ষার্থী রাখতো। সর্বোচ্চ শিক্ষার্থী সংখ্যা নির্ধারণ করে দেয়ায় স্কুলগুলো আর তা করতে পারবে না।
সংশোধিত আদেশে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তির শূন্য আসনের তথ্য অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি স্কুলগুলোকে কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছে অধিদপ্তর। এগুলো হলো- তথ্য ফরমে ঢাকা মহানগরীর প্রতিষ্ঠান প্রধানরা প্রতিষ্ঠান সংলগ্ন তিনটি থানাকে ক্যাচমেন্ট এরিয়া নির্ধারণ করবেন। তথ্য ফরমে ব্যাংক সংক্রান্ত তথ্য অবশ্যই প্রত্যেক প্রতিষ্ঠান প্রধানকে অনলাইন ব্যাংক হিসাব নম্বর ও রাউটিং নম্বর দিতে হবে, এনালগ নম্বর দেয়া যাবে না। আর রেজিস্ট্রেশন ফরম পূরণের সময় কোনো প্রকার ভুল তথ্য দিলে এবং এ বিষয়ে পরবর্তীতে কোনো জটিলতা তৈরি হলে তথ্যদাতারা দায়ী থাকবেন। ভর্তি প্রক্রিয়া স্বচ্ছতার সঙ্গে সম্পন্ন করতে ১৭ অক্টোবরের মধ্যে সব প্রতিষ্ঠান প্রধানকে রেজিস্ট্রেশনের ফরম পূরণ করতে বলেছে অধিদপ্তর।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।