স্কুলের শ্রেণিকক্ষে বসার স্থান না পেয়ে বাড়ি ফিরে যায় শিক্ষার্থীরা - দৈনিকশিক্ষা

স্কুলের শ্রেণিকক্ষে বসার স্থান না পেয়ে বাড়ি ফিরে যায় শিক্ষার্থীরা

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি |

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার দক্ষিণ ঢেমশা চৌমুহনী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে এখনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। এ বিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ ও বসার জন্য বেঞ্চ নেই। ফলে গাদাগাদি করে বসে শিক্ষার্থীদের ক্লাস করতে হচ্ছে। একই সঙ্গে অনেক শিক্ষার্থীকে দাঁড়িয়েও ক্লাস করতে হচ্ছে। আবার অনেক শিক্ষার্থী জায়গা না পেয়ে বাইরে ঘোরাফেরা করে বা বাড়ি চলে যায়। ওই উপজেলায় দিন দিন বাড়ছে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা।

অথচ উপজেলার মধ্যে সন্তোষজনক ফলাফল অর্জনসহ শিক্ষার আলো ছড়িয়ে প্রতিষ্ঠানটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। শ্রেণিকক্ষ সংকট সমাধানে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বার বার ধরনা ও স্থানীয় সংসদ সদস্যের ডিও লেটার দিলেও এখনো কোন সুরাহা মিলেনি। ফলে দিনের পর দিন বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে।

জানা গেছে, দক্ষিণ ঢেমশা চৌমুহনী এলাকাটি উপজেলা সদর থেকে ৩ কিলোমিটার উত্তরপূর্বে অবস্থিত। এ এলাকাটিতে আনুমানিক ১৫ হাজার লোকের বসবাস। ২০০৪ খ্রিষ্ তৎকালীন সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নুরুল আমিন ওই এলাকায় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এলাকার শিক্ষানুরাগী ও দানশীল ব্যক্তিদের সহায়তায় চৌমুহনী এলাকায় প্রায় আড়াইশ শিক্ষার্থী নিয়ে বিদ্যালয়টির কার্যক্রম শুরু হয়। ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে সেটি নি¤œ মাধ্যমিক পর্যায়ে এমপিওভুক্ত হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে ৪ শতাধিক শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। এর মধ্যে ছাত্রীর সংখ্যা বেশি। একজন জুনিয়র শিক্ষকসহ ১১ জন শিক্ষক রয়েছে। এছাড়া খণ্ডকালীন হিসেবে রয়েছে একজন অফিস সহকারী। একজন করে আয়া ও নৈশ প্রহরী রয়েছে।

বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার সময় সেমিপাকা টিনশেড দিয়ে চার রুম বিশিষ্ট কক্ষে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু স¤প্রতি বয়ে যাওয়া বন্যায় ওই শ্রেণিকক্ষগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। তবুও শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে ঝুঁকি নিয়ে কয়েক দিন ক্লাস চলে। পরবর্তীতে অধিক ঝুঁকি বুঝতে পেরে শিক্ষার্থীদের সরিয়ে এলাকাবাসীর সহায়তায় নতুন করে আরেকটি সেমিপাকা টিনসেট ভবন তৈরি করা হয়। তবে সেখানে পর্যাপ্ত জায়গা নেই। কয়েকটি রুমে এখন ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা গাদাগাদি করে ক্লাস করছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, জরাজীর্ণ পুরাতন ভবনের দেয়ালে বড় ধরনের ফাটল দেখা দিয়েছে। টিনের চালাগুলো ফুটো হয়ে কক্ষের মধ্যে রোদের আলো প্রবেশ করছে। ফলে নতুন করে নির্মিত সেমিপাকা টিনশেডের কয়েকটি রুমে গাদাগাদি করে শিক্ষার্থীদের বসিয়ে শ্রেণি কার্যক্রম চালাতে বাধ্য হচ্ছেন শিক্ষকরা। প্রতিটি বেঞ্চে কমপক্ষে ৬ জন শিক্ষার্থী বসে ক্লাস করছে।

দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাইমা আক্তার, অষ্টম শ্রেণির নাফিজ উদ্দিন ও দশম শ্রেণির সিফাত আক্তার জানায়, শিক্ষার্থীরা যেদিন বেশি উপস্থিত থাকে, সেদিন একটু দেরি করে বিদ্যালয়ে আসলে দাঁড়িয়ে ক্লাস করতে হয়। অনেক সময় শ্রেণিকক্ষে জায়গা না পেয়ে ক্লাস না করে বাড়ি ফিরে যেতে হয়।

 শিক্ষার্থীদের অভিভাবক নুরুল আলম ও জামাল উদ্দিন জানান, বিদ্যালয়টির লেখাপড়ার মান ভালো হওয়ায় শুধু ঢেমশা নয়, সাতকানিয়া পৌরসভা, ছদাহা ও কেঁওচিয়া ইউনিয়ন এলাকার অনেক শিক্ষার্থী এ বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে। কিন্তু শ্রেণিকক্ষ সংকট ও চেয়ার টেবিলের অভাবে দীর্ঘদিন ধরে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।

ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহেদুল আনোয়ার চৌধুরী জানান, দীর্ঘ সময় গাদাগাদি ও দাঁড়িয়ে ক্লাস করার ফলে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ে। অনেক সময় শ্রেণিতে জায়গা না পেয়ে অনেক শিক্ষার্থী বাইরে ঘোরাফেরা ও ক্লাসে অনুপস্থিত থাকে। ফলে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি আরো জানান, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দে প্রথমবারের মতো এ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবে শিক্ষার্থীরা।

সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিল্টন বিশ্বাস বলেন, আমি ইতোমধ্যে বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেছি। নতুন ভবন পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা হয়েছে। আশা করি অচিরেই ভবনের বরাদ্দ পাওয়া যাবে।

স্থানীয় সংসদ সদস্য ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী বলেন, শ্রেণিকক্ষ সংকটের বিষয়টি জেনে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আমি ডিও লেটার পাঠিয়েছি। আশা করি শিগগিরই নতুন ভবনের বরাদ্দ আসবে।

হামলায় মোল্লা কলেজের ৩ শিক্ষার্থী নিহত, দাবি কর্তৃপক্ষের - dainik shiksha হামলায় মোল্লা কলেজের ৩ শিক্ষার্থী নিহত, দাবি কর্তৃপক্ষের সাত কলেজের অনার্স ৪র্থ বর্ষের পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha সাত কলেজের অনার্স ৪র্থ বর্ষের পরীক্ষা স্থগিত নৈরাজ্যকারীদের প্রতিহত করা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধান কাজ: সারজিস - dainik shiksha নৈরাজ্যকারীদের প্রতিহত করা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধান কাজ: সারজিস মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! - dainik shiksha মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! সোহরাওয়ার্দী কলেজ বন্ধ ঘোষণা - dainik shiksha সোহরাওয়ার্দী কলেজ বন্ধ ঘোষণা সাত কলেজের অনার্স ৪র্থ বর্ষের পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha সাত কলেজের অনার্স ৪র্থ বর্ষের পরীক্ষা স্থগিত কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে অনতিবিলম্বে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় এমপিওভুক্ত করতে হবে: নুর - dainik shiksha অনতিবিলম্বে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় এমপিওভুক্ত করতে হবে: নুর কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0075609683990479