দৈনিক শিক্ষাডটকম, লক্ষ্মীপুর : লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে মো. কামাল হোসেন বিল্লাল নামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক সিনিয়র শিক্ষককে পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়েছেন একই বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি একেএম ফারুক।
আজ বুধবার (২২ নভেম্বর) সকাল ১১টায় উপজেলার ৫নং চন্ডিপুর ইউনিয়নের মধ্য মাছিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। পরে বিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষকরা তাকে উদ্ধার করে রামগঞ্জ সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন।
আহত শিক্ষক কামাল হোসেন বিল্লাল মাছিমপুর গ্রামের মৃত ফজলুল হকের ছেলে ও বিদ্যালয়ের সভাপতি একেএম ফারুক একই গ্রামের আইচের বাড়ির মৃত মোহাম্মদ উল্লার ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মধ্য মাছিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক কামাল হোসেন বিল্লাল প্রতিদিনের মতো বিদ্যালয়ে আসেন। এরপরই সকাল ১১টায় বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি একেএম ফারুক অফিস কক্ষে প্রবেশ করে প্রধান শিক্ষকসহ অন্য শিক্ষকদের সামনে শিক্ষক রুমের টেবিল থেকে স্কেল নিয়ে সিনিয়র শিক্ষক কামাল উদ্দিনকে পিটিয়ে জখম করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
এ ব্যাপারে শিক্ষক কামাল হোসেন বিল্লাল জানান, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি প্রায়ই আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। আজ সকালে আমাদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অন্য কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি না করিয়ে পার্শ্ববর্তী মাছিমপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি করানোর জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। এ সময় আমি মাছিমপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞানের ক্লাস খুব একটা ভালো হয় না বলার সঙ্গে সঙ্গে টেবিলের ওপর থেকে স্কেল নিয়ে আমার মাথায় আঘাত করেন। এত দ্রুত ঘটনাটি ঘটেছে, আমি কিছু বুঝে ওঠার আগেই উনি স্কুল থেকে চলে যান। আমি বর্তমানে রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এ কে এম ফারুক জানান, এটা একটা অনাকাঙিক্ষত ঘটনা। এজন্য আমি অনুতপ্ত। আমি তো মানুষ, ফেরেশতা নই। ভুল হতেই পারে। ঘটনার পর পরই বিষয়টি সমাধানের জন্য শিক্ষক বিল্লালের বাড়িতে গিয়েছি। কিন্তু কাউকে পাইনি। দয়া করে আপনারা বিষয়টি সমাধান করে দিন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্বার্থে লেখালেখির দরকার নেই।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক মাছিমপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক জানান, গত দুই বছর আগেও একেএম ফারুক একজন শিক্ষককে মাছিমপুর বাংলাবাজারে হাঁটবারের দিন প্রকাশ্যে লাঞ্ছিত করেন। পরে ক্ষমা চেয়ে পার পান।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক মৌসুমী আক্তার জানান, কিছু বুঝে ওঠার আগেই ঘটনাটি ঘটে গেল। পরে আমিসহ অন্য শিক্ষকরা মিলে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করি। এভাবে একজন শিক্ষকের ওপর হামলা দুঃখজনক।
রামগঞ্জ উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ফরিদ উদ্দিন জানান, খবর পেয়ে আমরা সব কর্মকর্তা হাসপাতালে গিয়েছি। শিক্ষকের ওপর হামলার ঘটনায় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ফারুকের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।