স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়সহ তিন দফা দাবি নিয়ে দুই ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করার পর রাস্তা ছেড়েছেন ঢাকার সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা।
তিতুমীর ঐক্যের ব্যানারে বুধবার (৩০ অক্টোবর) সকাল ১১টায় কলেজের প্রধান ফটকে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষাথীরা।
পরে মিছিলটি মহাখালীর আমতলী, ও গোল চত্বর ঘুরে ফের তিতুমীর কলেজের মূল ফটকের সামনে এসে অবস্থান নেয়।
এর আগে আমতলী মোড়েও কিছু সময় অবস্থান করেন শিক্ষার্থীরা।
মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচির কারণে মহাখালী, আমতলী, গুলশানের পথে যাতায়াতকারীদের ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
এ সময় অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া মোটর সাইকেল, সিএনজি, প্রাইভেটকার, ও বাস আটকে দেন আন্দোলনে নামা শিক্ষার্থীরা।
তাদের তিন দাবির মধ্যে রয়েছে- সরকারি তিতুমীর কলেজকে ‘তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়ে’ রূপান্তরের জন্য কমিশন গঠন; ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত’ বাতিল করে ৭ কলেজ থেকে সরকারি তিতুমীর কলেজকে আলাদা করা এবং একক স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপরেখা প্রনয়ণ করা।
তিতুমীর ঐক্যের উপদেষ্টা মোশাররফ হোসেন রাব্বি বলেন, বিগত ২৭ বছর ধরে তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপান্তর করার দাবিতে আন্দোলন হয়ে আসছে। ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দ থেকে এই আন্দোলন চলছে। এই আন্দোলনে জড়িয়ে আছে রক্তক্ষয়ী ইতিহাস।
শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর সাতটি কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
কলেজগুলো হলো ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেছা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ।
সাত কলেজের অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক সমস্যা নিরসনে গত ২৪ অক্টোবর শিক্ষা মন্ত্রণালয় ১৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। ওই কমিটিকে সুপারিশ দিতে ৬ সপ্তাহ সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
এই কমিটি বাতিল করে অবিলম্বে কমিশন গঠনের দাবি তুলেছেন শিক্ষার্থীরা।
সেই দাবি নিয়ে বুধবারও সায়েন্স ল্যাব মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।
তিতুমীর কলেজের আন্দোলনকারীরা লিখিত বক্তব্যে বলেন, “আমরা শুরুতেই রাস্তায় নামিনি। চেষ্টা করেছিলাম নীতি-নির্ধারকদের কাছে আমাদের দাবি পৌঁছে দিয়ে সমাধান করতে। আমরা মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা, শিক্ষা উপদেষ্টা ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বরাবর চারটি গণস্বাক্ষর সম্বলিত স্মারকলিপিসহ ৯৪ পেইজের ফাইল জমা করেছি। এক মাসেও কোনো প্রতুত্তর না পেয়ে আমরা রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছি।”
গত ২৪ অক্টোবর মহাখালীতে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালনের পর আন্দোলনকারীদের একটি প্রতিনিধি দল সচিবালয়ে বৈঠক করেছিলেন বলেও জানিয়েছেন এই কলেজের শিক্ষার্থীরা।
রাব্বি বলেন, “আমাদের প্রতিনিধি দলকে নিয়ে যায়া হলে সেখানে শিক্ষা উপদেষ্টা অসুস্থ থাকায় নুমেরী জামান (যুগ্মসচিব, বিশ্ববিদ্যালয় অধিশাখা-২) ও মো. শাহীনুর ইসলাম (উপসচিব, সরকারি সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়) সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি টিমের সাথে সাক্ষাৎ করেন।
“তাদের কাছে আমাদের তিন দফা দাবি উপস্থাপন করি। তারা আমাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগে রাখবেন এবং আমাদের দাবি নিয়ে আলোচনা করবেন বলে আশ্বাস দিলেও তারা আমাদের সাথে করেননি। এই পরিস্থতিতিতে বাধ্য হয়ে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করতে হচ্ছে।”
বিকালে কলেজের ছাত্র সংসদের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন রাব্বি।