দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক: শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেছেন, মুখস্ত নির্ভর শিক্ষা ও স্মরণশক্তিকে মেধা বলে চালিয়ে দেওয়ার যে মানসিকতা সেখান থেকে বের হয়ে না আসতে পারলে আমরা স্মার্ট প্রজন্ম গড়ে তুলতে পারবো না।
মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘লার্নিং এক্সিলারেশন ইন সেকেন্ডারি এডুকেশন প্রজেক্টে’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য স্মার্ট প্রজন্ম গড়তে শিক্ষায় যে রূপান্তরের কাজ চলছে তার মাধ্যমে নতুন প্রজন্মকে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে ১৬ বছর পর্যন্ত কম খরচে দেশের সকল শিশুর শিক্ষা নিশ্চিত করা সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। বর্তমান কারিকুলামের শিখন পদ্বতি ভিন্ন। গতানুগতিক শিক্ষার ধারণা থেকে এই পদ্বতি ভিন্ন। এটা অভিজ্ঞতা নির্ভর। গতানুগতিক শিক্ষাকে যেভাবে দেখা হয়, শুধু কিছু তথ্য আমরা মুখস্ত করবো, মেমোরি ড্রিভেন প্রসেস, সেখান থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
বর্তমান কারিকুলামের মূলনীতি নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, নলেজ, ভ্যালুজ ও স্কিলস এই তিনটির সমন্বয়ে হবে আমাদের শিক্ষা। সাম্প্রদায়িকতামুক্ত, সমতা, জাতীয়তাবোধ, কর্মমুখী শিক্ষা ও দক্ষতা প্রভৃতি ভ্যালু আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। নলেজ দেওয়ার জায়গায় শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে, মূল্যবোধের জায়গায়তেও প্রশিক্ষণ দিতে হবে। এক্সেস ও ইকুইটি (সমতা) নিশ্চিত করতে হবে। প্রক্রিয়াগত কারণে অথবা অর্থের অভাবে যেনো কোনো শিক্ষার্থী ঝরে না পড়ে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন— ‘শিক্ষার্থীদের বিশাল একটি অংশ যদি খুব কম বয়সে ঝরে পড়ে তাহলে তো আমরা স্মার্ট প্রজন্ম তৈরি করতে পারবো না।’ সে লক্ষ্যে আমরা অনেক উদ্যোগ নিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের মাধ্যমে বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে, যাতে করে শিক্ষার্থীরা অর্থের অভাবে ঝরে না পড়ে।
মূল্যায়ন নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন , যে প্রক্রিয়ায় আমরা মূল্যায়ন করছিলাম সেটিও একটি চ্যালেঞ্জ। মূল্যায়নের কারণে, অর্থের কারণে অনেক শিক্ষার্থী ঝরে পড়ছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বেগম শামসুন নাহার। সভাপতিত্ব করেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান। সম্মানিত অতিথি ছিলেন কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. ফরিদ উদ্দিন আহমদ, বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর মি. অ্যাবদুলেই সিক। এরা ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগ, ইআরডি, আইএমইডি ও প্ল্যানিং কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন সংস্থার প্রধান, বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও অংশীজন।
প্রতিমন্ত্রী শামসুন নাহার বলেন, মাধ্যমিক শিক্ষার উন্নয়ন, শিক্ষার্থীদের ধরে রাখা ও শিক্ষকের মান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এই লেইস প্রজেক্ট ।
২০৪১ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে সকলকে আন্তরিকভাবে কাজ করতে সকলের প্রতি আহ্বানন জানান প্রতিমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় ‘লার্নিং এক্সিলারেশন ইন সেকেন্ডারি এডুকেশন প্রজেক্ট’ বাস্তবায়ন করছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর।