ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসকে ‘স্মার্ট ক্যাম্পাসে’ রূপ দিতে নেতাকর্মীদের ১০টি সাংগঠনিক নির্দেশনা দিয়েছে ঢাবি শাখা ছাত্রলীগ। এসব নির্দেশনায় সাংগঠনিক শৃঙ্খলা পরিপন্থি, বেআইনি ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী শহীদের রক্তস্নাত সংগঠন, বাংলার ছাত্র সমাজের নির্ভরতার ঠিকানা বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগের প্রাণভোমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে জাতির প্রত্যাশা অপরিসীম। ইতিহাসের নানা বাঁকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ঐতিহাসিক সেই দায়িত্ব পালন করেছে এবং ছাত্রলীগ তাতে নেতৃত্ব দেওয়ার গৌরব অর্জন করেছে।
এতে আরও বলা হয়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার স্মৃতিধন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ ছাত্রসমাজের কাছে অনুকরণীয়। শেখ হাসিনার পরিকল্পিত স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ পথ দেখাবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি স্মার্ট ক্যাম্পাস হিসেবে পরিণত করতে ছাত্রলীগের প্রত্যেক নেতাকর্মীর জন্য অবশ্য পালনীয় ১০ সাংগঠনিক নির্দেশনা হলো-
১. সাংগঠনিক কর্মসূচি ও নির্দেশনার বাইরে ব্যক্তিগত ও দলবদ্ধভাবে যে কোনো কর্মকাণ্ডে জড়িত হওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
২. বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও আবাসিক হলগুলোতে শতভাগ শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে উদ্যোগী হতে হবে। পরিবেশ নষ্ট হতে পারে এমন কোনো কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত হওয়া যাবে না।
৩. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর দেশের শিক্ষা উন্নয়ন ও গবেষণা, সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা ও শিল্পচর্চার অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে সুপরিচিত। এরকম প্রতিটি উদ্যোগ-আয়োজন সফলভাবে সম্পন্ন করতে ছাত্রলীগের কর্মীদের স্বতঃস্ফূর্ত স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে ভূমিকা রাখতে হবে।
৪. বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাকৃতিক পরিবেশ নির্মল-মনোরম রাখতে সকল প্রকার ব্যক্তিগত ব্যানার, ফেস্টুন ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে।
৫. মোটরবাইক শোডাউন, উচ্চ শব্দে হর্ন বাজানো, সাউন্ড সিস্টেমের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার করা যাবে না।
৬. আবাসিক হলগুলোতে শিক্ষার পরিবেশ উন্নতকরণে, সুশৃঙ্খল আবাসন ও স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য নিশ্চিতকরণে ভূমিকা রাখতে হবে।
৭. বিশ্ববিদ্যালয় পরিমণ্ডলে ক্রিয়াশীল অপরাপর প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, বাস কমিটি প্রভৃতির সঙ্গে সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক ও সদ্ভাব বজায় রাখতে হবে।
৮. গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিক বন্ধুদের দায়িত্ব পালনে সর্বাবস্থায় সহযোগিতা করতে হবে।
৯. ধর্মীয় উগ্রবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদ-জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, গুজব ও বিভ্রান্তি ছড়ানো, অপরাধমূলক প্রবণতা, মাদক সংশ্লিষ্টতার সঙ্গে জড়িত শিক্ষার্থীদের বিষয়ে প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সহযোগিতা করতে হবে।
১০. সাংগঠনিক শৃঙ্খলা পরিপন্থি, নিরাপত্তা বিঘ্নকারী, বেআইনি, ইভটিজিং ও র্যাগিং ইত্যাদি কর্মকাণ্ডের সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত হওয়া যাবে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে ছাত্রলীগের প্রত্যেক নেতাকর্মী নিজেকে একজন ‘অনুকরণীয় এবং নির্ভরশীল’ বন্ধু হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে ভূমিকা পালনের আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।