বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম বলেছেন, আমাদের নিজস্ব ক্লাউডে নিজেদের ডেটাগুলো রাখা এখন সময়ের দাবি। আমারা যদি স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করতে চাই তাহলে এখন আমাদের মানবসম্পদ উন্নয়নের পাশাপাশি কিছু ইনফাস্ট্রাকচারেরও প্রয়োজন আছে। তার মধ্যে যদি প্রথমেই আসতে হয় সেটা হচ্ছে আমাদের নিজস্ব ক্লাউড।
শনিবার রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিন এ ফাইবার এট হোম এবং ফেলিসিটি আইডিসির আয়োজনে সাইবার সিকিউরিটি বিষয়ক নলেজ শেয়ারিং সেশনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে একথা কলেন।
উপাচার্য বলেন, আমাদের বেশিরভাগ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো বিদেশি কোম্পানির ক্লাউডে নিজেদের ডেটা রাখছি। হতে পারে বিদেশি কোম্পানির ক্লাউড তুলনামূলক কমদামে পাওয়া যায়। কিন্তু আমাদের ওই ধরনের একটি ইনফাস্টাকচার তৈরি করতে হবে যেখানে আমরা নিজেদের ক্লাউড ব্যবহার করে নিজেদের ডেটা রাখতে পারবো।
তিনি বলেন, বিদেশি কোম্পানির ক্লাউডে ডেটা রাখার সমস্যা হচ্ছে ওই ক্লাউডের সমস্ত কিছু তাদের জানা। তারা আমাদের ডেটার অপব্যবহার হয়তো করবে না। কিন্তু আমাদের ডেটা এনালাইসিস করে আমাদের দেশের বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করবে না, কিংবা আমাদের দেশের বিভিন্ন পলিস এনালাইসিস করে তাদের ব্যক্তিগত কাজে লাগাবে না, সেই ব্যাপারে কেউ কি নিশ্চয়তা দিতে পারবে?
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম বলেন, গুগল, ইউটিউব থেকে শুরু করে অন্যান্য সব ক্ষেত্রে আমরা আমাদের ডেটাকে বিদেশিদের হাতে তুলে দিচ্ছি। আমাদের খেয়াল রাখতে হবে বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ ডেটা। আজকে একটি দেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ভালো আছে তাই আমরা সেই দেশে আমাদের ডেটা রেখে দিচ্ছি, কালকে যখন সম্পর্ক খারাপ হবে তখন আমাদের এই ডেটাকে যুদ্ধের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে তারা আমাদের দেশকে ধ্বংস করার চেষ্টা করবে না, সেই নিশ্বয়তা কে দেবে?
উপাচার্য আরো বলেন, আমাদের ডিভাইসগুলো এখনো আমাদের নিজস্ব না। মনিটরিং সফটওয়্যারসহ অন্যান্য ডিভাইস আমরা বিদেশ থেকে নিয়ে আসছি। এ বিদেশের প্রতি নির্ভরতা যতোদিন থাকবে ততদিন আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারবো না। কাজেই আমাদের নিজস্ব ডিভাইস তৈরির উদ্যোগ নিতে হবে। ইতোমধ্যে আমরা ল্যাপটপ, মোবাইল ফোনসহ অন্যান্য ডিভাইস তৈরিরর উদ্যোগ নিয়েছি এবং এক্ষেত্রে সফলও হয়েছি।
তিনি আরো বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা অনেকগুলো সেক্টর ডিজিটালাইজেশন করে করতে পেরেছি। এখন আমারা চাই এ ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে আমাদের জনগণকে সেবা দিতে। ডিজিটাল সেবায় আমাদের ফাইনান্সিয়াল সেক্টরগুলো অনেকদূর এগিয়ে গেছে। সত্যিকার অর্থেই এটি আমাদের অনেক বড় অর্জন। আপনারা দেখবেন যে, আজ থেকে দশ বছর আগে এক ব্যাংক থেকে আরেক ব্যাংকে লেনদেন করতে অনেক সময় লাগতো। সেখানে বর্তমানে প্রযুক্তির কল্যাণে আমরা বাংলাদেশের একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলেও মুহূর্তের মধ্যে সেই সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে পারছি।
অনুষ্ঠানে ফাইবার এট হোমের চেয়ারম্যান মঈনুল হক সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক অথরিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জি এস এম জাফরুল্লাহ।