ভাষার জন্য প্রাণোৎসর্গকারী বীর সন্তানদের শ্রদ্ধা ও ভালবাসা নিবেদনের ফুলে ছেঁয়ে গেছে স্মৃতির শহীদ মিনার। যেমনটি ছেঁয়েছিলো আজ থেকে ৭০ বছর আগে।
মঙ্গলবার একুশে ফেব্রুয়ারি প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত হয় শহীদ মিনার। রাজনৈতিক, সামাজিক, পেশাজীবী ও বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে শ্রদ্ধা নিবেদনে জনতার ঢল নামে। মুহুর্তের মধ্যে বাঙালির গৌরব ও অহংকারের প্রতীক কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার শ্রদ্ধা ও ভালবাসার অর্ঘ্যে ভরে ওঠে।
সেই ফুলের স্তূপকে তখন নতুন রূপ দিতে ব্যস্ত জাতীয় ক্যাডেট কোরের (বিএনসিসি) এয়ার উয়িং, ন্যাভাল উয়িং ও আর্মি উয়িং, স্কাউট, গার্লস গাইডের সদস্যরা। বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা হলে তাঁরা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, ভাষা শহীদদের স্মরণে নিবেদিত শ্রদ্ধায় যুক্ত থাকা বেশ গর্বের। অভিজ্ঞতার ঝুলিতেও যুক্ত হচ্ছে এক অনন্য অভিজ্ঞতা।
এদিকে শ্রদ্ধা নিবেদনে শহীদ মিনারে কেউ এসেছেন সংগঠনের সঙ্গে, কেউবা ব্যক্তি হিসেবে এসেছেন। পরিবারের ছোট্ট সদস্যটিকে সঙ্গে নিয়ে। মতিঝিল থেকে এসেছেন রুবাইয়া ইসলাম। সঙ্গে একমাত্র সন্তান নিশিতা। মা-মেয়ে দু’জনেই সেজেছেন একুশের সাজে।
রুবাইয়া ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, একমাত্র সন্তানকে নিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এসেছি। সে যেন একুশের চেতনায় নিজেকে ধারণ ও লালন করতে পারে সেজন্য তাকে নিয়ে এখানে। এছাড়া প্রাণের বিনিময়ে যে আমরা এ বাংলা ভাষা পেয়েছি, বাংলা ভাষার পেছনে যাদের আত্মত্যাগ, সেই রফিক-জব্বার-সালাম-বরকতকে যুগের পর যুগ স্মরণ রাখতে পারে, তেমনটিই প্রত্যাশা।
রাজধানীর সিপিআই পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে এসেছেন একদল শিক্ষার্থী। প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী মো. স্বাধীন বলেন, আমরা বেশ কয়েকজন বন্ধু স্যারদের সঙ্গে এসেছি। শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো শেষ। বেশ ভালো লাগছে, এবারই প্রথম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আসা।
এদিকে, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শহীদদের শ্রদ্ধা জানানোকে ঘিরে কয়েক স্তরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। সেই সঙ্গে পুরো শহীদ মিনার এলাকায় ও সড়কে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে।