দৈনিক শিক্ষাডটকম, সিরাজগঞ্জ : শিক্ষকের গুলিতে শিক্ষার্থী আহতের ঘটনায় সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাস উত্তপ্ত। এরমধ্যেই ছাত্রীদের অভিযোগ, শিক্ষক রায়হান শরীফ তাদের ‘যৌন হয়রানি’ করতেন। ওই শিক্ষক রাতে ভিডিও কল দিয়ে তার কাছে যেতে বলতেন।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, অস্ত্র প্রদর্শন করে মাঝে মধ্যে ক্যাম্পাসে আসতেন শিক্ষক রায়হান শরীফ। সোমবারও (৪ মার্চ) পিস্তল নিয়ে তৃতীয় বর্ষের ক্লাসরুমে প্রবেশ করেন তিনি। কীভাবে পিস্তলে গুলি চালাতে হয় তা শ্রেণিকক্ষেই শিক্ষার্থীদের দেখান তিনি।
এ সময় উপস্থিত থাকা ছাত্র আরাফাত আমিনের ওপর পিস্তল তাক করে আগের ক্ষোভ থেকে গুলি ছুঁড়েন। এর আগের কোনো এক ক্লাসে আরাফাত আমিন হাসাহাসি করলে সেই ঘটনার জের ধরে রাগের বশে সরাসরি গুলি করেন তিনি। তবে পকেটে মোবাইল থাকায় প্রাণে বেঁচে যান ওই শিক্ষার্থী।
আরো পড়ুন : বিদেশি পিস্তলের ছবি দেখলেই ডাউনলোড করতেন ছাত্রকে গুলি করা শিক্ষক
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন শিক্ষার্থীরা। এই সময় ছাত্রীরা শিক্ষকের বিরুদ্ধে ‘যৌন হয়রানির’ অভিযোগ তুলে তার বহিষ্কার দাবি করেন।
ছাত্রীরা জানান, রাত নেই, দিন নেই ওই শিক্ষক তাদের হয়রানি করে আসছেন। পরীক্ষার রুমে গেলে তিনি বিভিন্ন প্রকার অঙ্গভঙ্গি করেন। তাদের হয়রানি করার চেষ্টা করেন। গায়ে হাত দেন।
মেডিক্যাল কলেজের এক ছাত্রী বলেন, ‘মধ্যরাতে ভিডিও কল দিয়ে স্যার তার কাছে যেতে বলেন। রাত ৩টার দিকেও মেসেজ দিয়ে বলেন, তোদের দেখে নেব। ওই শিক্ষক তিন মাস ধরে জ্বালাতন করে আসছেন। বিষয়টি অন্য শিক্ষকদেরকেও জানিয়েছে।’
আরো পড়ুন : ছাত্রকে গুলি করা শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা, তদন্ত কমিটি গঠন
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রায় প্রতিটি ছাত্রীকে হয়রানি করে আসছিলেন রায়হান শরীফ। এখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। সবাই প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে। তাকে এই কলেজ থেকে অপসারণ করতে হবে।
শহীদ এম মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ আমিরুল হোসেন চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘শিক্ষক রায়হান শরীফের বিরুদ্ধে আনা এসব অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।’
অভিযুক্ত শিক্ষক রায়হান শরীফকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি কমিউনিটি মেডিসিন লেকচারার। তার ব্যবহৃত পিস্তলটির লাইসেন্স আছে কি না খতিয়ে দেখছেন পুলিশ।