এবারের পবিত্র হজের খুতবা সরাসরি অনুবাদ করা হবে বিশ্বের ২০টি ভাষায়। এর মধ্যে অন্যতম হলো বাংলা। আর এই অনুবাদ খুতবা চলাকালীন বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের অন্তত একশ কোটি মানুষ সরাসরি শুনতে পাবে।
মক্কা ও মদিনার ২ পবিত্র মসজিদের নির্বাহী প্রধান শেইখ আব্দুর রহমান বিন আব্দুল আজিজ আল সুদাইস খুতবার অনুবাদ প্রজেক্ট উদ্বোধনকালে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজের নামে এই প্রজেক্টের নামকরণ করা হয়েছে। আশা করা যায় এ প্রজেক্টের মাধ্যমে ধর্মীয় সহনশীলতা, সংযম ও শান্তির বার্তা তুলে ধরা হবে।
এ বছর হজের খুতবার বাংলা অনুবাদের দায়িত্বে থাকবেন সৌদি আরবে অধ্যয়নরত বাংলাদেশের চার শিক্ষার্থী। তাঁরা হলেন– ড. খলীলুর রহমান, আ ফ ম ওয়াহিদুর রহমান মাক্কী, মুবিনুর রহমান ফারুক ও নাজমুস সাকিব। গত বছরও এই চার বাংলাদেশি হজের খুতবার অনুবাদের দায়িত্বে ছিল।
ড. খলীলুর রহমান গত বছর মক্কার উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি সম্পন্ন করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিগগিরই তাঁর স্ত্রীও পিএইচডি সম্পন্ন করবেন। তাঁর বাড়ি কুমিল্লার শাসনগাছায়। ১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দে ধামতী ইসলামিয়া কামিল মাদরাসা থেকে দেশে কামিল বিভাগে প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন তিনি।
মাওলানা আ ফ ম ওয়াহিদুর রহমান মাক্কীর মাধ্যমে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে হজের খুতবার বাংলা অনুবাদ শুরু হয়। তাছাড়া তিনি পবিত্র মসজিদুল হারামের জুমার খুতবা অনুবাদ কার্যক্রমে যুক্ত রয়েছেন। তাঁর বাড়ি কক্সবাজার জেলার রামুতে। বর্তমানে তিনি উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি গবেষক হিসেবে অধ্যয়নরত। ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসা থেকে হাদিস বিভাগে কামিল ও মাদরাসা-ই-আলিয়া থেকে তাফসির বিভাগে কামিল ডিগ্রি সম্পন্ন করেন।
এ বছর পবিত্র হজের মূল খুতবা দেবেন মসজিদুল হারামের ইমাম ও খতিব শায়খ মাহের বিন হামাদ আল-মুআইকিলি। আগামী ৯ জিলহজ মসজিদে নামিরা থেকে ২০ লাখেরও বেশি হাজির উদ্দেশে তিনি হজের খুতবা পেশ করবেন। ২০টি ভাষায় তা সম্প্রচার করা হবে। এসব কাজের তত্ত্বাবধান করছে মক্কা ও মদিনার পবিত্র দুই মসজিদের তত্ত্বাবধানকারী সাধারণ কর্তৃপক্ষ।
যেকোনো ডিভাইস থেকে মানারাতুল হারামাইন (https://manaratalharamain.gov.sa/) ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে একটি ভাষা নির্বাচন করলে খুতবার অনুবাদ শোনা যাবে। তাছাড়া মানারাতুল হারামাইন মোবাইল অ্যাপ, আল-কোরআন চ্যানেল, আস সুন্নাহ চ্যানেলসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ইউটিউব, ফেসবুক ও টুইটারে তা শোনা যাবে। ওয়েবসাইটে বিগত বছরের খুতবা ও এর অনুবাদও পাওয়া যাবে।
উল্লেখ্য, গত ১৪৩৬ হিজরি মোতাবেক ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে জেনারেল প্রেসিডেন্সি বিভাগের তত্ত্বাবধানে পাঁচটি ভাষায় আরাফার খুতবা অনুবাদ প্রকল্প শুরু হয়। ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাসহ মোট ১০টি ভাষায় খুতবার অনুবাদ করা হয়। ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে ১৪টি ভাষায় এবং ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে ২০টি ভাষায় অনুবাদ করা হয়। মূলত সর্বোচ্চসংখ্যক মানুষের কাছে ইসলামের বাণী পৌঁছাতে নতুন ভাষা সংযুক্ত করা হচ্ছে।