হজ পালনের জন্য পাঁচদিনে পাঁচ স্থানে বেশ কিছু ফরজ, ওয়াজিব ও সুন্নত আমল করতে হয়। নারী পুরুষ সবাইকে পবিত্র শরীরে এই আমলগুলো করতে হবে। আমল ছাড়া কোনো ইবাদত গ্রহণযোগ্য নয়।
হজের আমলগুলো শুরু করার পর কোনো নারীর পিরিয়ড শুরু হলে তার করণীয় হলো—
হায়েজ (পিরিয়ড) অবস্থায় নারীরা শুধু তাওয়াফ ছাড়া হজের অন্য সকল আমল পালন করতে পারবেন। যেমন উকুফে আরাফা, উকুফে মুজদালিফা, সাফা-মারওয়া সাঈ, কঙ্কর নিক্ষেপ ইত্যাদি। হায়েজ শেষ হওয়ার পর গোসল করে তাওয়াফ করতে হবে। হায়েজের কারণে তাওয়াফ বিলম্বিত হলে কোনো গুনাহ হবে না। সুতরাং এ নিয়ে দুশ্চিন্তা বা মনোক্ষুণ্ন হওয়ারও কোনো কারণ নেই।
যদি তার সফরের সময়কাল শেষ হয়ে আসে, কিন্তু পিরিয়ড বন্ধ না হয়, তাহলে সফরের শেষ দিকে ওই অবস্থায়ই ওমরার তাওয়াফ করে নেবে। তারপর ওমরার সাঈ করবে এবং চুল কেটে হালাল হয়ে যাবে। আর অপবিত্র অবস্থায় ওমরার তাওয়াফ করার কারণে একটি দম দেবে। অর্থাৎ হারাম এলাকায় একটি ছাগল বা দুম্বা জবাই করবে।
আর হায়েজ বন্ধ হওয়ার আগেই ফেরত ফ্লাইটের তারিখ হয়ে গেলে ওষুধ খেয়ে হায়েজ বন্ধ করে তাওয়াফ করা যাবে। যদি শুরু থেকেই ওষুধ-বড়ি খেয়ে পিরিয়ড বন্ধ রেখে কেউ হজের সমস্ত কাজ করেন, তাতেও শরিয়তের দৃষ্টিতে কোনো আপত্তি নেই।
(মাহমুদিয়া: ১৫/৪৯১, ফাতহুল কাদির: ২/৩৩৭)
হজের ফরজ আমলগুলো হলো—
১. ইরামের নিয়ত বা ইচ্ছা করা।
২. অকুফে আরাফা করা, ৯ জিলহজ জোহর থেকে ১০ জিলহজ ফজরের আগপর্যন্ত যেকোনো সময় আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করা।
৩. তাওয়াফে জিয়ারত করা, ১০ জিলহজ ভোর থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত যেকোনো সময় কাবাঘর তাওয়াফ বা সাতবার প্রদক্ষিণ করা।
হজের ওয়াজিব আমলগুলো হলো—
১. আরাফা থেকে মিনায় ফেরার পথে মুজদালিফায় ১০ জিলহজ ভোর থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত সময়ের মধ্যে কিছু সময় অবস্থান করা।
২. সাফা ও মারওয়া সায়ি করা বা দৌড়ানো।
৩. রমিয়ে জিমার বা ১০, ১১ ও ১২ জিলহজ জামারায় শয়তানকে পাথর মারা।
৪. তামাত্তু ও কিরান হজে দমে শোকর করা।
৫. মাথার চুল মুড়িয়ে বা কেটে ইহরাম সমাপ্ত করা।
৬. বিদায়ী তাওয়াফ করা।
৭. মদিনা শরিফ রওজাতুন নবী সা. জিয়ারত করা। (আসান ফিকাহ, ইউসুফ ইসলাহি, দ্বিতীয় খণ্ড, পৃষ্ঠা: ২৫১)