রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ছেলে শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ দুটি আবাসিক হলের একটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, অন্যটি শহীদ মুখতার ইলাহী হল। সম্প্রতি পূর্ববর্তী কোনো ঘোষণা ছাড়াই বন্ধ রয়েছে শহীদ মুখতার ইলাহী হলের ডাইনিং। এর ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ওই হলের প্রায় ৪০০ আবাসিক শিক্ষার্থী।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই গত ২৮ আগস্ট থেকে শহীদ মুখতার ইলাহী হলের ডাইনিং বন্ধ রয়েছে। ফলে ওই হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা ছুটছেন অপর হলের ডাইনিং ও ক্যানটিনে। সেখানেও খাবারের সংকুলান না হলে শিক্ষার্থীরা যেতে বাধ্য হচ্ছেন পার্কের মোড়ের বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরাঁয়। সেখানে খাবারের অতিরিক্ত দামের কারণে মাস চলতে হিমশিম খেতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। কিছু শিক্ষার্থী পড়াশোনার ক্ষতি হলেও বাধ্য হচ্ছেন নিজেদের কক্ষে বৈদ্যুতিক হিটারে রান্না করতে।
কক্ষে রান্না করা একাধিক শিক্ষার্থী জানান, হলের ডাইনিং বন্ধ হওয়ায় তাঁরা সমস্যায় পড়েছেন। প্রতি বেলা খাবারের পেছনে ছুটতেই অনেক সময় এবং অতিরিক্ত টাকা ব্যয় হচ্ছে তাঁদের। আর বারবার যাতায়াতে পড়াশোনায়ও ব্যাঘাত ঘটছে।
শহীদ মুখতার ইলাহী হলের আবাসিক শিক্ষার্থী রবিউল ইসলাম সাকিব বলেন, ‘একে তো মানহীন খাবার শিক্ষার্থীদের নিয়মিত খাওয়ানো হচ্ছে, তার ওপর কোনো নোটিশ ছাড়াই হঠাৎ ডাইনিং বন্ধ করা হয়েছে। দ্রুত সময়ে ডাইনিং চালু করা এবং খাবারের মান উন্নত করার জন্য প্রশাসনের কাছে আমরা অনুরোধ করছি।’
একই হলের আরেক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘এক সপ্তাহ ধরে ডাইনিং বন্ধ হওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছি আমরা। শিক্ষার্থীরা খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে অথচ হল কর্তৃপক্ষের কোনো পদক্ষেপই দেখছি না। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশে সব মেসে এখনো ৬০ টাকাতেই তিন বেলা খাবার পাওয়া যাচ্ছে, সেখানে হলে আমরা দুই বেলায় ৭০ টাকা দিয়ে খাবার খেতাম।’
ওই শিক্ষার্থী আরও বলেন, ‘খাবারের মানোন্নয়নের কথা আর কী বলব, এখন তো ডাইনিংই বন্ধ।’ এ বিষয়ে শহীদ মুখতার ইলাহী হলের সহকারী রেজিস্ট্রার আল-আমিন বলেন, ‘হলের ডাইনিংয়ের দায়িত্ব যাকেই দেওয়া হচ্ছে, সে কয়েক দিন দায়িত্ব পালনের পর ছেড়ে দিতে চাইছে। দ্রব্যমূল্য বেশি হওয়ায় ৩৫ টাকা মিল রেটে খাওয়ানোয় নাকি তাদের লোকসান হচ্ছে। বর্তমানে কেউ দায়িত্ব না নেওয়ায় ডাইনিং বন্ধ আছে।’
তবে এ সমস্যা দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন শহীদ মুখতার ইলাহী হলের প্রাধ্যক্ষ শাহীনুর রহমান। তিনি বলেন, খাবারের দাম না বাড়ালে কেউ ডাইনিংয়ের দায়িত্ব নিতে চাইছে না। চলতি সপ্তাহেই ডাইনিং খোলার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হবে।