দীর্ঘ গরমের ছুটি শেষ, স্কুলগুলোতে ক্লাস শুরু হয়েছে ১০ জুন। তবে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় এখনও হাঁসফাঁস গরমের জেরে নাজেহাল সকলে। এই পরিস্থিতিতে সরকারি, সরকার পোষিত, সরকার অনুমোদিত স্কুলগুলোকে পঠনপাঠনের সময় পরিবর্তন করার নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। এই মর্মে ডিরেক্টরেট অফ স্কুল এডুকেশন-এর তরফে একটি বিশেষ ‘অ্যাডভাইসরি’ প্রকাশিত হয়েছে।
ওই ‘অ্যাডভাইসরি’তে বলা হয়েছে, স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে আবহাওয়ার পরিস্থিতি অনুযায়ী, জুন মাসের বাকি দিনগুলোতে অন্য সময়ে ক্লাস করাতে পারবে স্কুলগুলো। তবে এ ক্ষেত্রে মিড ডে মিলের মতো গুরুত্বপূর্ণ অ্যাকাডেমিক অ্যাক্টিভিটির সময় পরিবর্তন করা যাবে না।
এই নিয়ম শুধু প্রাথমিক স্কুলের ক্ষেত্রেই নয়, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের ক্ষেত্রেও একইভাবে প্রযোজ্য। এর আগে চলতি সপ্তাহেই স্কুলের পঠনপাঠন শুরু হওয়ার মুখেই হুগলি জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের তরফে অনির্দিষ্ট কালের জন্য সকাল সাড়ে ৬টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত ক্লাস করানোর বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল।
প্রকাশিত ‘অ্যাডভাইসরি’র বিষয়ে অ্যাডভান্সড সোস্যাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসের সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতির মতে, স্কুলগুলোর নিজের মতো করে চলার বিষয়টি আগামী দিনেও যাতে বহাল থাকে, তা শিক্ষা দফতরের তরফে সুনিশ্চিত করতে হবে। তিনি আরও বলেন, গ্রীষ্মপ্রধান রাজ্যে গরমের ছুটি প্রয়োজনের তুলনায় কম। তিনি শিক্ষা দফতরের কাছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে সঠিক সময়ে গরমের ছুটি চালু করার অনুরোধ জানিয়েছেন।
বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল জানিয়েছেন, রাজ্যে তীব্র গরমের পরিস্থিতি ৬ জুন থেকে শুরু হয়েছে। এর পরও ১০ জুন স্কুল খোলার পর শিক্ষা দফতর এখন উপদেশ দিচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ‘‘আর কয়েকটা দিন পর বৃষ্টিও শুরু হবে। শিক্ষা দফতর দেরি করে বিষয়গুলি নিয়ে পদক্ষেপ করছে, তাই এই উপদেশ আর কার্যকারী নয়। কারণ ইতিমধ্যেই অসহ্য আবহাওয়ার কারণে এক জন শিক্ষক এবং এক জন ছাত্রকে আমরা হারিয়ে ফেলেছি।
ওই একই বিজ্ঞপ্তি পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের তরফেও প্রকাশ করা হয়। এর পরই শিক্ষামহলের একাংশ প্রশ্ন তুলতে থাকে, বিভিন্ন কারণে স্বাভাবিক পঠনপাঠন ব্যাহত হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে, শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী বলেন, এই নির্দেশিকাকে স্বাগত জানাই। বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনা করে স্কুলগুলোর গরমের ছুটি বাড়িয়ে দেওয়া হোক। তবে সার্বিকভাবে পঠনপাঠন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা সম্ভব। তখন আলাদা করে সরকারকে ছুটি ঘোষণা করতে হবে না।