কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে বেধড়ক পেটানোর অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া পুলিশ কর্মকর্তা হারুন অর রশিদকে চাকরিচ্যুত করার দাবি জানিয়েছেন ছাত্রলীগের একাংশ। একইসঙ্গে তাকে গ্রেফতারের দাবিও জানিয়েছেন তারা।
সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মানববন্ধন করে এ দাবি জানান ছাত্রলীগের একাংশের নেতারা। সংহতি প্রকাশ করে কয়েকজন সাবেক নেতাকেও মানববন্ধনে অংশ নিতে দেখা যায়।
গাজীপুর জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এর ব্যখ্যায় নেতারা বলছেন, পিটিয়ে দুই নেতার দাঁত ভেঙে দেয়ার পরও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ হারুণ কাণ্ডে প্রতিক্রিয়া দেখাতে চাচ্ছে না। তাই তারা সাধারণ শিক্ষার্থী ব্যানারে মানববন্ধনের আয়োজন। হারুন কাণ্ডে কেন্দ্রীয় নেতাদের ‘নিরব অবস্থানে’ উষ্মা প্রকাশ করেন ছাত্রলীগ নেতাদের কেউ কেউ।
তারা বলছেন, ঢাবির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগ হারুন কাণ্ডে নিন্দা ও প্রতিবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দিলেও কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ এখনো কোনো প্রতিবাদলিপি বা কর্মসূচি দেয়নি। এর ফলে সংগঠনের সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীদের অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন স্ট্যাটাস দিয়ে ক্ষোভ ঝাঁড়ছেন।
আরো পড়ুন : পিস্তলের বাট দিয়ে আমার দাঁত ভেঙেছে এডিসি হারুন: ছাত্রলীগ নেতা নাঈম
মানববন্ধনে ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সোহান খান বলেন, এডিসি হারুন নিজের সহকর্মীকেও পিটিয়েছেন। তার কাজ পুরো পুলিশ প্রশাসনকে কলঙ্কিত করেছে। তাকে কেনো প্রশ্রয় দেয়া হবে? তিনি যেভাবে ছাত্রলীগের নেতাদের অমানুষিক নির্যাতন করেছেন তাতে শুধু প্রত্যাহার বা বদলিতে যথেষ্ট নয়। তাকে গ্রেফতার করে স্থায়ী বহিষ্কার করতে হবে।
আরো পড়ুন : এডিসি হারুন সাময়িক বরখাস্ত
মানববন্ধনে ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মাহমুদুল হাসান, নজরুল ইসলাম, সরদার আয়নাল, সৈয়দ আরিফ হোসেন, মাজহারুল ইসলাম শামীম, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মামুন অর রশিদ, আরিফুজ্জামান আল ইমরান, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হক সিদ্দিকী, ডাকসুর সাবেক ক্রীড়া সম্পাদক শাকিল আহমেদ তানভীর, গাজীপুর ছাত্রকল্যাণ সমিতির সভাপতি আশিক রব্বানী জিহানসহ অনেকে অংশ নেন।
গাজীপুর ছাত্রকল্যাণ সমিতির সভাপতি আশিক রব্বানী জিহান বলেন, ছাত্রলীগের ওই দুই নেতা তার কুকর্ম জেনে ফেলাতে থানায় এনে মধ্যযুগীয় কায়দায় তাদের পিটিয়ে আহত করে। পিস্তলের বাট দিয়ে আঘাত করে দাঁত ভেঙে ফেলা হয়েছে। হারুন নিয়মিত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেন, কিন্তু তাকে শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে না। আমরা আজকের মানববন্ধনের মাধ্যমে তার সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাই।
ঢাবি শিক্ষার্থী মাহবুবুল আলম ইমন বলেন, এডিসি হারুনের বিরুদ্ধে আমরা রুখে দিতে আমরা এখানে দাঁড়িয়েছি। আমরা জানি, হারুন পরকীয়ায় লিপ্ত থাকা অবস্থায় হাতেনাতে ধরা পড়ার পর সে আমাদের দুই ভাইকে নির্মমভাবে আহত করে। সে এর মাধ্যমে নিজের কুকর্ম ঢাকতে চেয়েছিলো কিন্তু সেটা সে ঢাকতে পারেনি। এডিসি হারুন একজন মানসিক বিকারগ্রস্ত লোক। এর কারণ হলো, সে শিক্ষার্থীদের যেকোনো যৌক্তিক আন্দোলনে হামলা করে।
এর আগে গত শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে নারীঘটিত একটি ঘটনার জেরে শাহবাগ থানায় ধরে নিয়ে গিয়ে তাদের মারধর করা হয়। পরে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনার জেরে রাতে শাহবাগ থানার সামনে ভিড় করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে মধ্যরাতে থানায় গিয়ে ঘটনার মীমাংসা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও পুলিশের কর্মকর্তারা।