বিখ্যাত ভারতীয় গায়ক ও গীতিকার, সুরকার হেমাঙ্গ বিশ্বাসের জন্মদিন আজ। তিনি বাংলা ও অসমীয়া ভাষায় নিজ সৃষ্টিকর্মে সৃজন করেছেন। মূলত লোকসঙ্গীতকে কেন্দ্র করে গণসঙ্গীত সৃষ্টির ক্ষেত্রে তার অবদান উল্লেখযোগ্য, তিনি ভাটিয়ালি গানে নতুন মাত্রা সংযোজন করেছিলেন।
হেমাঙ্গ বিশ্বাস ১৯১২ খ্রিষ্টাব্দের আজকের এই দিনে বর্তমান বাংলাদেশের সিলেটের মিরাশিরে জন্মগ্রহণ করেন। হবিগঞ্জ হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করার পর তিনি মুরারিচাঁদ কলেজে ভর্তি হন। সেখানে তিনি স্বাধীনতা আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। তিনি ১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দে কমিউনিস্ট পার্টির সংস্পর্শে আসেন।
১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দে কারাবন্দী থাকাকালে তিনি যক্ষারোগে আক্রান্ত হন। তারপর যাদবপুর হাসপাতালে কিছুকাল চিকিৎসাধীন থাকেন এবং সেই কারণে তিনি মুক্তি পান। ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দে তেলেঙ্গানা আন্দোলনের সময়ে তিনি গ্রেফতার হন এবং তিন বছর বন্দী থাকেন। ১৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দের এপ্রিল মাসে মুম্বাইতে অনুষ্ঠিত আইপিটি-এর সপ্তম সর্বভারতীয় সন্মেলনে হেমাঙ্গ বিশ্বাসের নেতৃত্বে অসমের ৪০ জন প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন।
স্বাধীনতার আগে ভারতীয় গণনাট্য সংঘের গানের সুরকারদের মধ্যে তিনিই ছিলেন প্রধান। সেই সময়ে তার গান ‘তোমার কাস্তেটারে দিও জোরে শান’, ‘কিষাণ ভাই তোর সোনার ধানে বর্গী’ নামে প্রভৃতি আসাম ও বাংলায় সাড়া ফেলেছিলো। ১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দে তিনি চীনে যান চিকিৎসার জন্য। আড়াই বছর থাকেন এবং খুব কাছ থেকে দেখেন চিনের সাংস্কৃতিক আন্দোলন।
১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দে স্থায়ীভাবে চলে আসেন কলকাতা এবং সেই সময়েই চাকরি নেন সোভিয়েত কনস্যুলেটের সোভিয়েত দেশ পত্রিকার সম্পাদকীয় দপ্তরে।
জ্যোতি প্রসাদ, মঘাই ওজা, বিষ্ণু প্রসাদ রাভা, ফণী শর্মা, লক্ষ্মীনাথ বেজবড়ুয়া, ভূপেন হাজরিকা ইত্যাদি অসমের জাতীয় সংস্কৃতির সন্মানীয় ব্যক্তিদের হেমাঙ্গ বিশ্বাস মূল্যায়ন করে গেছেন এবং বঙ্গীয় সমাজের সঙ্গে তাদের পরিচয় করে দিয়েছেন। ১৯৮৭ খ্রিষ্টাব্দের ২২ নভেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।