দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ ওঠা ১২ বিচারপতিকে বাদ দিয়ে হাইকোর্টের ৫৪টি বেঞ্চ পুনর্গঠন করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) আদালত সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এসব বেঞ্চে আগামী রোববার (২০ অক্টোবর) থেকে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারকাজ পরিচালনা কার হবে।এ বিষয়ে প্রধান বিচারপতির পৃথক আদেশ সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
গত ৪ আগস্ট সর্বশেষ ৫৩ বেঞ্চে বিচারকাজ হয়েছিল। পরদিন ৫ আগস্ট সাধারণ ছুটিতে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান।
এরপর বিভিন্ন কারণে হাইকোর্ট বিভাগে আর বিচারকাজ শুরু হয়নি। একপর্যায়ে ছাত্র আন্দোলনের মুখে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ আপিল বিভাগের ছয় বিচারপতি পদত্যাগ করেন।
তারপর নতুন প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করা হয়। নতুন প্রধান বিচারপতি নিয়োগের পর ১২ আগস্ট থেকে ৮ বেঞ্চে বিচারকাজ শুরু হয়।
পরদিন আরও এক বেঞ্চ বাড়িয়ে ৯ বেঞ্চ গঠন করা হয়। এরমধ্যে হাইকোর্ট বিভাগের চার বিচারপতিকে আপিল বিভাগে নিয়োগ দেওয়া হয়। তারপর ১৮ আগস্ট থেকে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারকাজ পরিচালনার জন্য ৫১ বেঞ্চ গঠন করেছিলেন প্রধান বিচারপতি।
সবশেষে ২৩ জন বিচারপতি নিয়োগ দেয়া হয় হাইকোর্টে। এর মধ্যে দুজনকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। এছাড়া ছাত্রদের দাবির মুখে অতীতে নিয়োগ পাওয়া ১২ বিচারপতিকে বেঞ্চের বাইরে (বিচারকাজ থেকে) রাখা হয়।এর আগে গত ১৬ অক্টোবর উচ্চ আদালতের ওই ১২ বিচারপতিকে ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়।
সেদিন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমদ ভূঞা গণমাধ্যমকে জানান, ১২ জন বিচারপতিকে বেঞ্চ দেওয়া হচ্ছে না। এর মানে হচ্ছে, তারা বিচারকাজ পরিচালনা করতে পারবেন না। আর বিচারপতিদের পদত্যাগের যে দাবি, এক্ষেত্রে-বিচারক নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি, আবার অপসারণও করেন রাষ্ট্রপতি। এখানে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির যা করণীয় তিনি তা করেছেন। আর ২০ অক্টোবর অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস বিষয়টি আদালতে উত্থাপন করবে। পর্যায়ক্রমে কী হয় সেটা জানা যাবে।
এসব বিচারপতি আওয়ামী লীগ সরকারের দোসর হিসেবে কাজ করেছেন বলে অভিযোগ করে তাদের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ করেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীরা।
নানান অনিয়মের অভিযোগ ওঠা হাইকোর্টের ওই ১২ বিচারপতিকে চায়ের আমন্ত্রণ জানান প্রধান বিচারপতি। পরে তাদের ছুটিতে পাঠানো হয়।
ছুটিতে যাওয়া ১২ বিচারপতির মধ্যে রয়েছেন- নাঈমা হায়দার, খুরশীদ আলম সরকার, মো. আতাউর রহমান খান, খিজির হায়াত, শাহেদ নূর উদ্দিন, এস এম মনিরুজ্জামান, মো. আখতারুজ্জামান, খোন্দকার দিলিরুজ্জামান, মো. আমিনুল ইসলাম, এস এম মাসুদ হোসেন দোলন, আশীষ রঞ্জন দাস ও শেখ হাসান আরিফ।