ছাত্র জনতার গণ আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর যে স্মরণসভা আয়োজন করা হয়েছিল তা আপাতত হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘১৪ তারিখের স্মরণসভা হচ্ছে না। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী ৭২৮ জনের শহিদের তালিকা হাতে এসেছে। ২০ হাজার ২৬৩ আহত জন। চূড়ান্ত তালিকা হাতে পেলে স্মরণসভা হবে। এর খরচ ৫ কোটির টাকার মধ্যে রাখতে বলা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে শহিদ পরিবারের সদস্যরা আসবেন, এখানেই সিংহভাগ খরচ হবে।’
জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের ৭ সদস্যের কার্যনির্বাহী পরিষদ গঠন হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ড. মুহাম্মদ ইউনূস এই ফাউন্ডেশনের প্রধান। ফাউন্ডেশন মূলত শহিদ ও আহতদের নিয়ে কাজ করবে। তাদের স্মৃতি ধরে রাখতে কাজ করবে। সাধারণ মানুষের ডোনেশন, সরকারি তহবিলের অর্থ ও বিদেশি সহায়তায় অর্থে চলবে ফাউন্ডেশনের কাজ।’
অন্তর্বর্তী সরকার একটি গণমাধ্যম কমিশন তৈরির প্রক্রিয়া শুরু করেছে বলেও জানান উপদেষ্টা নাহিদ। তিনি বলেন, ‘সাইবার সিকিউরিটি আইন নিয়ে কাজ চলছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার সাথে সাংঘর্ষিক কোনো আইন থাকবে না। প্রাথমিকভাবে যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হচ্ছে। মৌলিক সংস্কার বলতে মানবাধিকার আইনের সাথে সাংঘর্ষিক আইনে পরিবর্তন করা হবে।’
প্রশাসন ঢেলে সাজানোর কাজ চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মন্ত্রণালয়গুলোতে যে-সব প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ আছে সেগুলো রিভিউ করার জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছে। যে-সব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
নাহিদ বলেন, ‘প্রশাসনিক স্থবিরতা আছে। অসহযোগিতা পাচ্ছি। শ্রমিক অসন্তোষ আছে। বিভিন্ন দাবি দাওয়ার কারণে অস্থিরতা চলছে। তবে কেটে যাবে বলে আশা করছি। সাংবাদিকদের উপর যে নিপীড়ন তার বিষয়ে তদন্ত হবে। ১০০ দিনের কর্মসূচিতে সেখানে অনেক বিষয় আছে। সংস্কারের কাজ চলছে।’
হাইটেক পার্কের নাম পরিবর্তন ও এগুলোতে দুর্নীতির যে অভিযোগ আছে সেগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানান তথ্য উপদেষ্টা।
দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে অসন্তোষ তুলে ধরে নাহিদ বলেন, ‘সবার কাছে আহ্বান কেউ যেন আইন হাতে না তুলে নেই। পুলিশ আন্দোলনে তাদের ভূমিকার কারণে দাঁড়াতে পারছে না। পুলিশকে প্রমাণ করতে হবে তাদের অবস্থান। তাদের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে হবে। পুলিশের ক্ষোভ রয়েছে, তাঁরাও চাচ্ছে পুলিশকে যেন পরবর্তীতে রাজনৈতিক ভাবে ব্যবহার না করা হয়। স্বায়ত্তশাসনের চায় তারা। মাঠ পর্যায়ের পুলিশ সবচেয়ে ক্ষতির মুখোমুখি।’
তথ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘চাঁদাবাজির সাথে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে আলাপ হয়েছে। জনগণের জায়গা থেকে এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়ে থাকতে পারে। গণহত্যাকে যারা উসকে দিয়েছে তাদের বিচার ট্রাইব্যুনালের হবে। কোন নিরাপদ ব্যক্তি যেন ভুক্তভোগী না হয়।’