বিশ্বের ৭৩টি দেশের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে অংক, ইংরেজি, বিজ্ঞান ও সাইবার অলিম্পিয়াডে সাফল্য অর্জন করায় বাংলাদেশের ২৩৮ শিক্ষার্থীকে পুরস্কৃত করা হয়েছে।
আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজির বিজয় মিলনায়তনে ‘পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে’ বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেয় বাংলাদেশ আইকিউ অলিম্পিয়াড। তারা বাংলাদেশ থেকে অলিম্পিয়াডের সমন্বয় করেছে।
গত বছর নভেম্বর থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ভারতের ইন্টারন্যাশনাল কনকুয়েস্ট আইকিউ অলিম্পিয়াড ও সায়েন্স অলিম্পিয়াড ফাউন্ডেশনের (এসওপি) আয়োজনে অনলাইনে ধাপে ধাপে অলিম্পিয়াড প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
এর মধ্যে আইকিউ প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের ৯৫ জন পদক অর্জন করেন। আর এসওপি প্রতিযোগিতায় ১৪৩টি পদক অর্জন করেন বাংলাদেশের প্রতিযোগিরা। এ ছাড়া অংশগ্রহণকারী বাকি সবাইকে সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।
পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আবু সাঈদ খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাবেয়া আক্তার, লুৎফর রহমান ও মো. আসাদুজ্জামান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আইকিউ অলিম্পিয়াডের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও মো. মশিউর রহমান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুস সাত্তার।
আবু সাঈদ খান বলেন, পত্রিকা টেলিভিশনে বেনজীর, আজিজ, মতিউরদের কাহিনী দেখে মনে হয়, এই দেশ কি আমরা চেয়েছি। ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তে অর্জিত বাংলাদেশের চেহারা কি এটাই। সেই যন্ত্রণার মধ্যে সোনামণিরা আশার আলো জ্বেলেছো। আগামীর বাংলাদেশ তোমাদের বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে তোমরা যারা বিজয় ছিনিয়ে এনেছো, তোমরাই বাংলাদেশের ভবিষ্যত।
তিনি বলেন, যে দেশে জ্ঞান চর্চা হয় না, তারা এগিয়ে যেতে পারে না। কেবল ধন-সম্পদ থাকলেই জাতি উন্নত হয় না। মধ্যপ্রাচ্যের আরব দেশগুলোর অনেক টাকা আছে। কিন্ত তারা কি উন্নত? ইউরোপ উন্নত। কারণ, তারা জ্ঞান-বিজ্ঞানে এগিয়ে গেছে। আমাদেরও জ্ঞান বিজ্ঞানে এগিয়ে যাওয়া দরকার। আমরা স্বাধীনতার ৫৪ বছর পেরিয়েছি, বাংলাদেশ এগিয়েছে। তবে যেখানে যাওয়ার কথা ছিল, সেখানে যেতে পারিনি। আমরা যতটা উন্নত হওয়ার কথা ছিল, ততটা হতে পারিনি। সেই উন্নত স্বপ্ন তোমরাই বাস্তবায়ন করবে।
আবু সাঈদ খান আরও বলেন, আজকে যুবকরা বিভ্রান্ত হচ্ছে, নানা অপকর্মে লিপ্ত হচ্ছে। এটা আমাদের জন্য কষ্টকর। তবে যারা বিজ্ঞানচর্চা করে, অলিম্পিয়াডে অংশ নেয়, সংগীতচর্চা করে—তারা বিপথগামী হয় না। সন্তানদের সৃজনশীল কাজে এগিয়ে রাখা দরকার। তাদেরকে এসব কাজে নিয়োজিত করলে তারা মানুষের মত মানুষ হয়ে উঠবে। দেশের মুখ উজ্জ্বল করবে।
এ ছাড়া অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ আইকিউ অলিম্পিয়াডের আয়োজনে ‘বায়ো স্পেলিং বি’ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এতে তিনটি ক্যাটাগরিতে মোট ৫৬ জন শিক্ষার্থী স্পেলিং প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। তিন ক্যাটাগরিতে প্রথম স্থান অর্জনকারীদের ট্রফি এবং দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিজয়ীকে পদক দেওয়া হয়। স্পেলিং বি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের নানা শব্দ জিজ্ঞেস করেন পরীক্ষকরা এবং সেগুলোর বানান করে অংশগ্রহণকারীরা।