সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার জজের আদেশে একটি অসঙ্গতি থাকায় ২৮ হাজার হবু শিক্ষকের যোগদান নিয়ে ফের অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। হবু শিক্ষকদের চূড়ান্ত সুপারিশ স্থগিত রাখার বিষয়ে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ স্থগিত করতে চেম্বার আদালতে আবেদন করেছিলো বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। সে আবেদনে সায় দিয়ে হাইকোর্টের ওই নির্দেশনা স্থগিত করে গত বুধবার আদেশ জারি করেছেন চেম্বার আদালতের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম। তবে
ওই আদেশে পদ সংরক্ষণের বিষয়ে সংখ্যাগত অসঙ্গতি থাকায় হবু শিক্ষকদের যোগদান নিয়ে ফের অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে এনটিআরসিএর কর্মকর্তারা।এ বিষয়টি ফের শুনানি হলে অসঙ্গতি দূর করা হবে আশা করছেন তারা। দ্রুত চেম্বার আদালতে বিষয়টি শুনানি হতে পারে বলে আশা কর্মকর্তাদের। গতকাল সোমবার এনটিআরসিএর কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি জানা গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনটিআরসিএর এক কর্মকর্তা দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, এক প্রার্থীর করা রিট আমলে নিয়ে জারি করা রুল শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া ছয় মাসের জন্য স্থগিত রাখার নির্দেশনা দিয়েছিলো হাইকোর্ট। ওই নির্দেশনায় স্থগিতাদেশ চেয়ে চেম্বার আদালতে আবেদন করা হয়েছিলো। গত বুধবার এ সংক্রান্ত আদেশ দেয়া হলেও তাতে কিছু অসঙ্গতি আছে। ওই রিটটি মোট ৮টি পদ সংশ্লিষ্ট হলেও আদেশে ২০টি পদ সংরক্ষণের বিষয়ে বলা হয়েছে। যা আবার শুনানি হয়ে আসতে হবে। যেহেতু আদালতের বিষয় আমরা এখনই প্রার্থীদের যোগদান ও চূড়ান্ত সুপারিশে বিষয়ে কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করতে পারছি না।
জানতে চাইলে এনটিআরসিএর সংশ্লিষ্ট দায়িত্বে থাকা অপর এক কর্মকর্তা দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, ওই আদেশে যে অসঙ্গতি তা মনে হচ্ছে যিনি অর্ডারটি টাইপ করেছেন তিনি ৮ এর স্থলে ২০ লিখেছেন। পরবর্তী শুনানিতে বিষয়টি চেম্বার আদালতের নজরে আনা গেলে এ অসঙ্গতি দূর হবে। আমরা সে অপেক্ষায়। দ্রুত পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা আছে।
সূত্র জানিয়েছে, শিক্ষক নিয়োগের জন্য আবেদন করেও নির্বাচিত হতে না পারা এক প্রার্থী রিট করেছিলেন। তার অভিযোগ ছিলো মেধাতালিকায় তার পেছনে থাকা প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। তাই তিনি আদালতের দারস্ত হয়েছিলেন। যা আমলে নিয়ে রুল জারি ও নিয়োগ প্রক্রিয়া ছয় মাস স্থগিত রাখার নির্দেশনা দিয়েছিলো হাইকোর্ট। যেটি স্থগিত করতেই চেম্বার আদালতে আবেদন করেছিলো এনটিআরসিএ।
এর আগেও নির্বাচিত হতে না পারা একজন প্রার্থীর করা রিটের প্রেক্ষিতে জারি হওয়া রুল নিয়ে আইনি জটিলতার শঙ্কা দেখা দিয়েছিলো। কিন্তু সে বিষয়ে সলিসিটর উইংয়ের মতামত চেয়েছিলো এনটিআরসিএ। সলিসিটর উইং রিট সংশ্লিষ্ট পদগুলো বাকি রেখে অন্য প্রার্থীদের চূড়ান্ত সুপারিশের বিষয়ে মতামত দিয়েছিলো বলে জানিয়েছিলেন কর্মকর্তারা।
এদিকে বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য নির্বাচিত প্রার্থীরা দ্রুত যোগদান করতে চাচ্ছেন। দ্রুত চূড়ান্ত সুপারিশ নিয়ে যোগদানের দাবি জানিয়ে দৈনিক আমাদের বার্তা ও দৈনিক শিক্ষাডটকমের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ করছেন।
প্রসঙ্গত, চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে চূড়ান্ত সুপারিশের অপেক্ষায় আছেন ৩২ হাজার শিক্ষক প্রার্থী। এর মধ্যে প্রায় ২৮ হাজার প্রার্থী ভি-রোল ফরম পূরণ করে অনলাইনে জমা দিয়েছেন। পুলিশ ভেরিফিকেশন চলমান রেখে তাদের চূড়ান্ত সুপারিশ করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমতি চেয়েছে এনটিআরসিএ। চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ২১ ডিসেম্বর। প্রাথমিক সুপারিশের ফল প্রকাশ করা হয় গত ১২ মার্চ। এতে দেশের স্কুল-কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য ৩২ হাজারের বেশি প্রার্থীকে নির্বাচন করা হয়। পরে অনলাইনে ভি-রোল ফরম পূরণের নির্দেশনা দেয়া হয়।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।