সোহরাওয়ার্দী কলেজ যেনো ধ্বং*সস্তূপ - দৈনিকশিক্ষা

৩৫ কলেজের শিক্ষার্থীদের সমন্বিত হামলাসোহরাওয়ার্দী কলেজ যেনো ধ্বং*সস্তূপ

আমাদের বার্তা, জবি |

‘সুপার সানডে’ ঘোষণা করে পুরান ঢাকার ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সমন্বিত হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছেন রাজধানীর প্রায় ৩৫টি কলেজের শিক্ষার্থীরা। ওই হামলার জেরে সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও সরকারি কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গেও সংঘর্ষ হয়েছে তাদের। পরে ৩৫ কলেজের বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ওই কলেজ দুটিতে ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছেন। এই হামলায় সোহরাওয়ার্দী কলেজ প্রায় ধ্বংস স্তূপে পরিণত হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। 

হামলায় রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর ড. মাহাবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে আব্দুর রউফ কলেজ, বিজ্ঞান কলেজ, নটরডেম কলেজ, সিদ্ধেশ্বরী কলেজ, ঢাকা কলেজ, সিটি কলেজ, খিলগাঁও মডেল কলেজ, তেজগাঁও কলেজ, যাত্রাবাড়ী আইডিয়াল কলেজসহ রাজধানীর বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। 

জানা গেছে, গতকাল দুপুর একটার দিকে প্রায় ৩৫টি কলেজের শিক্ষার্থীরা সমন্বিতভাবে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে হামলা চালান। সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীরা দুপুর ২টা নাগাদ তাদের ধাওয়া দেন। পরে পাল্টা ধাওয়া দেন ৩৫ কলেজের শিক্ষার্থীরা। তারা ধাওয়া দিয়ে ওই দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের সোহরাওয়ার্দী কলেজের সামনে নিয়ে যান। এরপর দুই পক্ষ ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন।  

এক সময় সমন্বিত শিক্ষার্থীদের ধাওয়ায় দুই কলেজের শিক্ষার্থীরা সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজে ভেতরে ঢুকে পড়েন। এ সময় সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ইয়ার ফাইনাল পরীক্ষা চলছিলো। 

 আরো পড়ুন:

এবার সেন্ট গ্রেগরি কলেজে সোহরাওয়ার্দী ছাত্রদের হা*মলা

ইচ্ছেমত ভা*ঙচুর করেছে শিক্ষার্থীরা: অধ্যক্ষ কাকলি

তারা ক্যাম্পাসে থাকা কলেজের মাইক্রোবাস, একটি অ্যাম্বুলেন্স, একটি প্রাইভেট কার, দুইটি মোটর সাইকেল ভাঙচুর করেন। এসময় ক্যাম্পাসের ডিজিটাল নোটিশ বোর্ডটিও ভাঙচুর করেন শিক্ষার্থীরা।

নিচতলা থেকে পুরাতন ভবনের দ্বিতীয় তলায় উঠে বাংলা, ইংরেজি বিভাগ ও অফিসরুমে ঢুকে ভাঙচুর ও লুটপাট চালান শিক্ষার্থীরা। একই ভবনে অবস্থিত ইসলামিক স্টাডিজ এবং ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগেও ভাঙচুর চালান তারা। ভাঙচুর চালান পরীক্ষার হলে থাকা বেঞ্চ ও উপাধ্যক্ষের কার্যালয়ে। তৃতীয় তলায় অবস্থিত প্রাণিবিদ্যা বিভাগের গবেষণাগারে ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়ে গবেষণাগারের কঙ্কাল লুট করে নিয়ে যান।

হামলার বিষয়ে এক পরিক্ষার্থী বলেন, পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে হঠাৎ ভাঙচুরের শব্দ শুনি, তখনো স্যার বলছিলেন পরীক্ষায় মনোনিবেশ করতে। কিন্তু হঠাৎ ভাঙচুরের তীব্রতা বেড়ে যায়। তখন স্যার বলছিলেন তোমাদের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে এবং তোমরা দ্রুত নিরাপদ স্থানে চলে যাও।   

কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছে, কলেজের এবং বিভাগের কোন কিছু বাদ রাখেননি শিক্ষার্থীরা। এসময় বিভিন্ন বর্ষের পরীক্ষার খাতার বান্ডিলগুলোও লুটপাট করে নিয়ে যান তারা। এমনকি বিভাগে থাকা কম্পিউটার, ল্যাপটপ, স্ক্যানারও ভাঙচুর থেকে বাদ যায়নি।

এই ঘটনা প্রসঙ্গে, সোহরাওয়ার্দী কলেজের অধ্যক্ষ কাকলি মুখোপাধ্যায় আমাদের বার্তাকে বলেন, আমরা বাকরুদ্ধ। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা আমাদের ওপর হামলা করে। আমাদের সব কক্ষে ভাঙচুর করেছে। 

তার অভিযোগ, আমি পুলিশকে কল দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা আমাদের জানায় তাদের উপযুক্ত ফোর্স না থাকায় পদক্ষেপ নিতে পারছে না। আমি বারবার আর্মি পাঠানোর জন্য বলেছি, কিন্তু তাদের দিক থেকে কোনো রেসপন্স পাইনি।

ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এখনও আটকে আছি। বাইরে যাওয়ার সুযোগ হয়নি। তবে যেটুকু অনুমান করছি কলেজের বেশিরভাগ কম্পিউটারগুলো ভেঙে ফেলা হয়েছে। পুরো কলেজ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। তারা যদি শিক্ষার্থীই হয়ে থাকে তবে কোন আর্দশে তারা আরেকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিকে এমন ধ্বংসস্তূপে পরিণত করলো। 

তবে হামলায় কতো জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন তা তাৎক্ষণিভাবে নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি। 

জানা গেছে, এই ভাঙচুর ও সংঘর্ষের সূত্রপাত মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের এক ছাত্রের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে। অভিজিত হাওলাদার নামে ওই ছাত্র ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ন্যাশনাল মেডিক্যাল হাসপাতালে ভর্তির দুইদিন পর গত ১৮ নভেম্বর মারা যান। তার মৃত্যুর পর টাকা দাবি করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লাশ আটকে রাখে বলে অভিযোগ ওঠে। গত ২০ নভেম্বর মাহবুব মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীরা লাশ নিতে গেলে তাদেরকে ফিরিয়ে দেয়া হয়। প্রত্যাখ্যাতরা তখন বিক্ষোভ শুরু করেন। ওই দিন সন্ধ্যার পর পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ করে সরিয়ে দেয়। পরদিন ২১ নভেম্বর সেই শিক্ষার্থীরা আবার ন্যাশনাল মেডিক্যালে গেলে সকালে কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজ

ছাত্রদল নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালান বলে অভিযোগ ওঠে। ওই হামলায় ৫০ জনের বেশি শিক্ষার্থী আহত হন বলেও দাবি করা হয়। 
ওই ঘটনাই বড় হতে হতে গতকাল ‘সুপার সানডে’ হামলায় পরিণত হয়। 

ঢাকা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের পরিচালক ব্রি. জে (অব.) ডা. ইফফাত আরা বলেন, শিক্ষার্থীরা যে অভিযোগ করছে, ভুল চিকিৎসায় মারা গেছেন এটা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমরা কলেজ শিক্ষার্থী, মৃত শিক্ষার্থীর পরিবারের সঙ্গে বসেছি। একটি তদন্ত কমিটিও গঠন হয়েছে।

কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজ কীভাবে জড়ালো এই প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা জানিনা তারা কীভাবে আসলো। আমারা তাদের কোনো হেল্প চাইনি। আসতেও বলিনি।

মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! - dainik shiksha মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! অ্যাডহক কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha অ্যাডহক কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশনা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে সোহরাওয়ার্দী কলেজ যেনো ধ্বং*সস্তূপ - dainik shiksha সোহরাওয়ার্দী কলেজ যেনো ধ্বং*সস্তূপ জোরপূর্বক পদত্যাগে করানো সেই শিক্ষকের জানাজায় মানুষের ঢল - dainik shiksha জোরপূর্বক পদত্যাগে করানো সেই শিক্ষকের জানাজায় মানুষের ঢল শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটি সারানোর এখনই সময় - dainik shiksha শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটি সারানোর এখনই সময় কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0069649219512939