৪৪ বছরের লড়াই : সলিল চক্রবর্তীকে ২ কোটি টাকা দেয়ার নির্দেশ - দৈনিকশিক্ষা

৪৪ বছরের লড়াই : সলিল চক্রবর্তীকে ২ কোটি টাকা দেয়ার নির্দেশ

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজে এমবিবিএস প্রথম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও ভর্তি হতে না পারা বান্দরবানের সলিল কান্তি চক্রবর্তী সর্বোচ্চ আদালতের রায় নিজের পক্ষে পেয়েছেন। গত বুধবার বিচারপতি মো. নূরুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন (আপিল) খারিজ করে দিয়েছেন। প্রায় ৪৪ বছর ধরে লড়াই চালিয়ে যাওয়া সলিল চক্রবর্তীকে দুই কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে কলেজ অধ্যক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। 

সলিল কান্তি চক্রবর্তীর আইনজীবী ইউনুস আলী আকন্দ গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় টেলিফোনে বলেন, আদালত রাষ্ট্রপক্ষের আপিল খারিজ করে দিয়েছেন। সলিলকে ক্ষতিপূরণ বাবদ দুই কোটি টাকাও দিতে বলেছেন আদালত। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের (চমেক) অধ্যক্ষকে ক্ষতিপূরণের টাকা পরিশোধ করতে বলা হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে আইনজীবী ইউনুস আলী আকন্দ বলেন, ‘অধ্যক্ষ বলতে চেয়ার বুঝি। বর্তমান চেয়ারকেই বুঝিয়েছেন আদালত। কত সময়ের মধ্যে টাকা পরিশোধ করতে হবে, তা পূর্ণাঙ্গ রায় হাতে পেলে বলতে পারব।’

আইনজীবী ও আদালত সূত্র জানায়, ১৯৭৮-৭৯ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস প্রথম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও সলিলকে ভর্তি হতে দেওয়া হয়নি। তাঁর বিরুদ্ধে উচ্চমাধ্যমিকের নম্বরপত্র জালিয়াতির অভিযোগ তুলে ফৌজদারি মামলার সুপারিশ করা হয়।

সলিল অভিযোগ মিথ্যা উল্লেখ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের দপ্তরে ভর্তির জন্য আবেদন করেন। পরে ১৯৯৪ খ্রিষ্টাব্দে তৎকালীন দুর্নীতি দমন ব্যুরোর সুপারিশে জালিয়াতির অভিযোগে সালিল কান্তির বিরুদ্ধে বান্দরবান থানায় মামলা করে পুলিশ। ২০০০ খ্রিষ্টাব্দে এই মামলার রায়ে জালিয়াতির অভিযোগ থেকে সলিল কান্তি চক্রবর্তীকে বেকসুর খালাস দেন আদালত।

এরপর পুনরায় মেডিক্যালে ভর্তির চেষ্টা চালাতে থাকেন সলিল চক্রবর্তী। ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি এ বিষয়ে মেডিক্যালসহ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে আইনি নোটিশ পাঠান। নোটিশে ১৫ দিনের মধ্যে তাঁর ভর্তির পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করা হয়। সাড়া না পেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন সলিল।

২০০৭ খ্রিষ্টাব্দের ১ আগস্ট রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে রুল যথাযথ ঘোষণা করার পাশাপাশি ২০০৭-০৮ শিক্ষাবর্ষে তাঁকে ভর্তি করাতে নির্দেশ দেওয়া হয়। হাইকোর্টের রায়ের সময় সলিল কান্তির বয়স ছিল ৪৪ বছর।

পরে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ওই আবেদনের শুনানির পর হাইকোর্টের রায় স্থগিত করা হয়। এরপর আপিল করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বুধবার সে আপিল খারিজ করে দেন সর্বোচ্চ আদালত।

সলিল চক্রবর্তীর বয়স এখন ৬০ বছরের বেশি। গতকাল বিকেলে তাঁর বান্দরবানের বাসায় গিয়ে তাঁকে পাওয়া যায়নি। একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার পর এক ব্যক্তি ওই প্রান্ত থেকে নিজেকে সলিলের ছোট ভাই প্রসেনজিৎ চক্রবর্তী পরিচয় দিয়ে কথা বলেন। প্রসেনজিৎ বলেন, তাঁর দাদা এখন চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। চিকিৎসক তাঁকে কথা বলতে নিষেধ করেছেন। তিনি বড় ভাইকে দেখতে হাসপাতালে ছিলেন তখন। মামলার বিষয়ে তিনি সুস্থ হয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলবেন। তবে কী অসুখ, কোন হাসপাতালে ভর্তি, এসব বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন প্রসেনজিৎ।

প্রসেনজিৎ জানান, এমবিবিএসে ভর্তির জন্য আইনি লড়াই চালানোর পাশাপাশি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে গণিত বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন তাঁর ভাই সলিল চক্রবর্তী।

আদালতের রায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে চমেক অধ্যক্ষ সাহেনা আক্তার বলেন, ‘বিষয়টি গণমাধ্যমে দেখেছি। তবে আমাদের কাছে রায়ের কপি আসেনি। এলে তখন বিষয়টি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে জানাব।’ 

অবশেষে বাজারে আসছে একাদশ শ্রেণির পাঁচ আবশ্যিক বই - dainik shiksha অবশেষে বাজারে আসছে একাদশ শ্রেণির পাঁচ আবশ্যিক বই অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে রেলগেট অবরোধ তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থীদের - dainik shiksha অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে রেলগেট অবরোধ তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থীদের আওয়ামী আমলে শত কোটি টাকা লুট শিক্ষা প্রকৌশলের চট্টগ্রাম দপ্তরে - dainik shiksha আওয়ামী আমলে শত কোটি টাকা লুট শিক্ষা প্রকৌশলের চট্টগ্রাম দপ্তরে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটির তালিকা - dainik shiksha শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটির তালিকা ছাত্ররা রাজনৈতিক দল ঘোষণা করবে কি না জনগণ নির্ধারণ করবে - dainik shiksha ছাত্ররা রাজনৈতিক দল ঘোষণা করবে কি না জনগণ নির্ধারণ করবে কুয়েটে ভর্তি আবেদন শুরু ৪ ডিসেম্বর, পরীক্ষা ১১ জানুয়ারি - dainik shiksha কুয়েটে ভর্তি আবেদন শুরু ৪ ডিসেম্বর, পরীক্ষা ১১ জানুয়ারি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0077829360961914