৪৫তম বিসিএসে আবেদন ফরম পূরণের নিয়ম - দৈনিকশিক্ষা

৪৫তম বিসিএসে আবেদন ফরম পূরণের নিয়ম

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

৪৫তম বিসিএসের আবেদনের প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। অনলাইনে আবেদন করা যাবে ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত। গত ৩০ নভেম্বর সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) ওয়েবসাইটে এই বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। এই বিসিএসে ২ হাজার ৩০৯ জন ক্যাডার নেয়া হবে। নন-ক্যাডারে নেয়া হবে ১ হাজার ২২ জনকে। ক্যাডার পদের পাশাপাশি প্রথমবারের মতো নন-ক্যাডার পদের সংখ্যা উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে পিএসসি। ক্যাডার পদে যেমন পছন্দ নির্দিষ্ট করে দেওয়া যায়, তেমনই নন-ক্যাডার পদেও পছন্দের তালিকা নির্দিষ্ট করে দিতে পারবেন প্রার্থীরা। শুক্রবার (২৩ ডিসেম্বর) প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এতথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা রবিউল আলম

আবেদনপ্রক্রিয়া

৪৫তম বিসিএসে আবেদনের জন্য এই ওয়েবসাইটে (bpsc.teletalk.com.bd) গিয়ে Online Application for 45th BCS অপশনে ক্লিক করে আবেদনপ্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। এখানে জেনারেল ক্যাডার, টেকনিক্যাল/ প্রফেশনাল ক্যাডার ও উভয় ক্যাডার—এই তিন অপশন থেকে কাঙ্ক্ষিত অপশনে ক্লিক করলে অনলাইন আবেদনের প্রথম পাতা দৃশ্যমান হবে। অন্য প্রার্থীকে অনুকরণ বা দোকান থেকে আবেদন ফরম পূরণ করলে বা বিস্তারিত না জেনে আবেদন করলে, চাকরিজীবনে আফসোস করতে হতে পারে। তাই আবেদনের পূর্বে প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো বিস্তারিত জেনে নিন।

প্রথম পাতা: ব্যক্তিগত তথ্য

এই অংশে প্রার্থীর নিজের নাম, মায়ের নাম, বাবার নাম ও জন্মতারিখ এসএসসি সনদে যেভাবে আছে সেভাবেই লিখতে হবে। এসএসসির সনদে না থাকলে মা-বাবার নামের আগে নতুন করে মৃত/ হাজি/ অন্য কোনো নতুন শব্দ লেখা যাবে না। জন্মতারিখ ভুল লিখলে প্রার্থিতা বাতিল হওয়ার আশঙ্কা আছে।

প্রার্থী ক্ষুদ্রজাতি গোষ্ঠী অথবা প্রতিবন্ধী হলে নির্ধারিত অপশন থেকে সেগুলো নির্বাচন করতে হবে। প্রার্থীর উচ্চতা ও বুকের মাপ সেন্টিমিটারে কনভার্ট করে লিখতে হবে। ওজন আনুমানিক হলেই হবে (দুই থেকে চার কেজি কমবেশি হতে পারে)। মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেয়ার আগে প্রার্থীকে রেজিস্টার্ড চিকিৎসক থেকে ওজন ও উচ্চতার প্রত্যয়নপত্র সংগ্রহ করতে হবে। বিজ্ঞপ্তিতে কোনো ক্যাডারের ওজন ও উচ্চতার আবশ্যিক শর্তের সঙ্গে প্রার্থীর ওজন ও উচ্চতা না মিললে, সেই ক্যাডার পছন্দক্রমে রাখা ঠিক হবে না।

এমপ্লয়মেন্ট স্ট্যাটাসে প্রার্থী বেকার হলে নট এমপ্লয়মেন্ট, রাজস্ব খাতের সরকারি চাকরিতে কর্মরত থাকলে রেগুলার বেসিস আন্ডার রেভিনিউ বাজেট, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকলে অটোনোমাস বা সেমি–অটোনোমাস অর্গানাইজেশন, বেসরকারি হলে প্রাইভেট সিলেক্ট করতে হবে। এই অংশে প্রার্থী চাকরিজীবী হলে মৌখিক পরীক্ষার সময় বিভাগীয় ছাড়পত্র, পুলিশ ভেরিফিকেশন ফরমে কর্মরত প্রতিষ্ঠানের তথ্য পূরণসহ প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে হবে।

বর্তমান আর স্থায়ী ঠিকানা সম্ভব হলে অভিন্ন দেওয়াই ভালো। তাহলে প্রার্থী সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়ার পর তখন এক ঠিকানায় পুলিশ ভেরিফিকেশন হবে। মেয়েদের ক্ষেত্রে স্থায়ী ঠিকানায় বাবার ঠিকানা ব্যবহার করাই সবচেয়ে ভালো। আপনার দেওয়া মুঠোফোন নম্বরে বিসিএসের সব প্রক্রিয়ার সংশ্লিষ্ট তথ্য খুদে বার্তার মাধ্যমে জানানো হতে পারে।

পরীক্ষার কেন্দ্র হিসেবে যে স্থানের নাম নির্বাচন করা হবে, সে কেন্দ্রেই প্রার্থীকে প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। পরবর্তী সময় কেন্দ্র পরিবর্তনের কোনো সুযোগ নেই। তবে সব প্রার্থীর মৌখিক পরীক্ষা ঢাকার আগারগাঁওয়ে অবস্থিত সরকারি কর্ম কমিশন কার্যালয়ে হবে।

প্রার্থী প্রিলিমিনারি পরীক্ষা ইংরেজি ভার্সনে দিতে ইচ্ছুক হলে ইংরেজি অপশনে টিক চিহ্ন দিতে হবে। তবে লিখিত পরীক্ষা প্রার্থী ইচ্ছেমতো যেকোনো ভার্সনে দিতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে এক বিষয়ের পুরো খাতা যেকোনো এক (বাংলা/ ইংরেজি) ভাষায় লিখতে হবে।

দ্বিতীয় পাতা: শিক্ষাগত যোগ্যতা

এই অংশে প্রার্থীর এসএসসি, এইচএসসি, স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের (যদি থাকে) তথ্যগুলো প্রার্থীর সার্টিফিকেট দেখে দেখে লিখলে ভুল হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে। স্নাতকে পঠিত বিষয়/ ডিগ্রি অপশনে প্রার্থীর ডিগ্রি বা বিষয়ের নাম না থাকলে আদারস অপশনে সাবজেক্টের নাম লিখতে হবে। প্রার্থীর স্নাতক বিষয়ের ওপর তাঁর জন্য প্রযোজ্য ক্যাডার ও নন-ক্যাডার তালিকা দৃশ্যমান হবে (তাই অপশনে উল্লেখিত বিষয়গুলো থেকে প্রার্থীর বিষয় নির্বাচন না করলে সংশ্লিষ্ট প্রফেশনাল ক্যাডার/ নন-ক্যাডার দৃশ্যমান না–ও হতে পারে)। অ্যাপিয়ার্ড দিয়ে আবেদন করার ক্ষেত্রে পরীক্ষা শুরু ও শেষের তারিখ লিখতে হবে। তবে এ ক্ষেত্রে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সময় বিভাগীয় প্রধানের প্রত্যয়নপত্র ভাইভা পরীক্ষার দিন বোর্ডে জমা দিতে হবে।

তৃতীয় পাতা: ক্যাডার অপশন

এই অংশে ওপরে দৃশ্যমান ক্যাডার তালিকা থেকে প্রার্থীর পছন্দ অনুযায়ী নিচে পছন্দক্রম সাজাতে হবে। এই অংশ পূরণের আগে অবশ্যই সব ক্যাডার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নেবেন। ক্যাডার তথ্য জানা না থাকায় এই অংশে বেশির ভাগ প্রার্থী ভুল করে পরে আফসোস করেন। সংবাদপত্র, ইন্টারনেট ও বাজারে প্রচলিত বিসিএস তথ্যভিত্তিক বই থেকে সব ক্যাডার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিতে পারেন। শূন্য পদের সংখ্যানুযায়ী নয়, আপনার পছন্দের চাকরির ধরন অনুযায়ী ক্যাডার পছন্দক্রম সাজাবেন। সব ক্যাডারেরই সমান মর্যাদা; কিন্তু কাজের ক্ষেত্র অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন সুযোগ-সুবিধা।

চতুর্থ পাতা: আবেদন প্রিভিউ

এই অংশে প্রার্থীর পূরণ করা সব তথ্য দৃশ্যমান হবে এবং কোনো ভুলত্রুটি থাকলে এডিট বাটনে ক্লিক করে সংশোধনও করতে পারবেন। অ্যাপ্লিকেন্টস ইন্টারেস্ট ফর নন-ক্যাডার মেন্যুর ৯ম গ্রেড/ ১০ম গ্রেড/ দুটিই/ কোনোটিই নয় অপশন থেকে একটি নির্বাচন করবেন। আপনি বেকার হলে, দুটি অপশন নির্বাচন করাই বুদ্ধিমানের কাজ। এর সঙ্গে প্রার্থীর ৩০০*৩০০ পিক্সেলের একটি পাসপোর্ট সাইজের ছবি (সর্বোচ্চ ১০০ কিলোবাইট) ও ৩০০*৮০ পিক্সেলের একটি স্বাক্ষর (সর্বোচ্চ ৬০ কিলোবাইট) নির্ধারিত বক্সে আপলোড করে আবেদন চূড়ান্তভাবে জমা দিতে হবে। বিসিএসের সব প্রক্রিয়ায় প্রার্থীকে আবেদনের স্বাক্ষর ব্যবহার করতে হবে।

পঞ্চম পাতা: নন-ক্যাডার অপশন

৪৫তম বিসিএসে প্রথমবারের মতো এই অংশ রয়েছে। প্রার্থীর পছন্দক্রম অনুযায়ী নন-ক্যাডার তালিকা তৈরি করতে হবে। ক্যাডারের মতো নন-ক্যাডার চয়েসের সময়ও নন-ক্যাডার চাকরিগুলোর বিস্তারিত জেনে এই অংশ পূরণ করুন। সংবাদপত্র, ইন্টারনেট ও বাজারে প্রচলিত বিসিএস তথ্যভিত্তিক বই থেকে নন-ক্যাডার পদগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিতে পারেন। একই গ্রেডের সব নন-ক্যাডারেরই সমান মর্যাদা; কিন্তু কাজের ক্ষেত্র অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন সুযোগ-সুবিধা।

ষষ্ঠ পাতা: আবেদনকারীর কপি

আবেদন চূড়ান্তভাবে সাবমিট করার পর ইউজার আইডি সংবলিত একটি অ্যাপ্লিকেন্টস (আবেদনকারী) কপি দৃশ্যমান হবে। অ্যাপ্লিকেন্টস কপি ডাউনলোড করে সংরক্ষণ করতে হবে। ইউজার আইডি ব্যবহার করে যথাযথ নির্দেশনা অনুসরণ করে টেলিটক সিমের মাধ্যমে পরীক্ষার ফি জমা দিতে হবে। ফি জমাদান সম্পন্ন হলে টেলিটক থেকে একটি পাসওয়ার্ড দেওয়া হবে। ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে প্রার্থীর প্রবেশপত্র ডাউনলোড ও সংরক্ষণ করতে হবে।

৪৫তম বিসিএসের বিশেষ দিক

প্রথমবারের মতো ৪৫তম বিসিএসে আবেদন সময়সীমা মাত্র ২১ দিন। দুটি জেনারেল ক্যাডারে (তথ্য ও বাণিজ্য) ৪৫তম বিসিএসে কোনো শূন্য পদ নেই। শুল্ক ও আবগারি ক্যাডারে ৫৪ পদের বিজ্ঞপ্তি (৩১তম-৪০তম বিসিএসের মধ্যে দীর্ঘদিন এই ক্যাডারে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়নি) এবং কারিগরি শিক্ষা ক্যাডারেও উল্লেখযোগ্য পদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে (এই ক্যাডারেও দীর্ঘদিন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বন্ধ ছিল)। প্রথমবারের মতো পরিবার পরিকল্পনার কারিগরি ক্যাডার পদের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি (৪৪১টি শূন্য পদ) দেওয়া হয়েছে। নন-ক্যাডার গ্রেড–৯ থেকে গ্রেড–১২ পদের নাম ও পদসংখ্যা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে এবং প্রথমবারের মতো ক্যাডারের পাশাপাশি নন-ক্যাডার পছন্দের সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের রাজাকার বলিনি, বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের রাজাকার বলিনি, বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী তীব্র সেশনজটের মহাশঙ্কা - dainik shiksha তীব্র সেশনজটের মহাশঙ্কা কলেজে ভর্তি : অতি চালাকদের শিক্ষাবোর্ডে ধরনা! - dainik shiksha কলেজে ভর্তি : অতি চালাকদের শিক্ষাবোর্ডে ধরনা! ক্যাম্পাস খুললে শিক্ষকরা কর্মসূচি চালু রাখবেন - dainik shiksha ক্যাম্পাস খুললে শিক্ষকরা কর্মসূচি চালু রাখবেন প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে কোটা, যা জানালেন সচিব - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে কোটা, যা জানালেন সচিব কলেজে ভর্তির সময় বাড়লো, ক্লাস শুরু ৬ আগস্ট - dainik shiksha কলেজে ভর্তির সময় বাড়লো, ক্লাস শুরু ৬ আগস্ট স্থগিত এইচএসসি পরীক্ষা ১১ আগস্টের পর - dainik shiksha স্থগিত এইচএসসি পরীক্ষা ১১ আগস্টের পর দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0027761459350586