বছরের শুরুতেই সারা দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠ্যবই বিতরণ করে সরকার। কিন্তু বছরের প্রায় পাঁচ মাস শেষ হতে চললেও গতকাল সোমবার পর্যন্ত রাঙামাটির বরকল উপজেলার ২৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বই পায়নি। এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় নয় শ। তবে অল্পসংখ্যক বই বিতরণের তথ্য পাওয়া গেছে। ফলে লেখাপড়ায় বিঘ্ন হচ্ছে এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের।
সরেজমিনে ঘুরে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। শিক্ষার্থীরা কবে বই পাবে তারও সঠিক তথ্য দিতে পারেনি বরকল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস।
বইবঞ্চিত বিদ্যালয়গুলো হলো জাক্কোবাজেই বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রামছড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রদংহাবা, পুলছড়া, চুমোচুমি, বড় হরিণা মুখ, কুদুছড়া, নোয়াপাড়া, কুসুমছড়ি দোসরিপাড়া, রংগাছছড়ি, বাকছড়ি, জুংছড়া, বামে ভূষণছড়া, বাজেইছড়া, মারিশ্যাছড়া, নোয়াপাড়া, তাগলকবাগ, মরাঠেগা, তেলখনিছড়া, পেরাছড়া, ঠেগাগুইছড়ি, রামুক্যাছড়ি ও জারুলছড়ি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, এসবের মধ্যে বামে ভূষণছড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাড়া অবশিষ্ট ২২টি এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক নেই। বরকল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে আটটি সুবর্ণভূমি ফাউন্ডেশন নামের একটি বেসরকারি সংস্থার সহায়তায় পরিচালিত হচ্ছে। অন্যগুলো জনগণের চাঁদার টাকা চলছে।
সুবর্ণভূমি ফাউন্ডেশনের সমন্বয়ক মানবাশীষ চাকমা বলেন, ‘আমাদের আটটি বিদ্যালয়ে ৩৩৮ জন শিক্ষার্থী আছে। আমরা বছরের শুরুতে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ে বইয়ের চাহিদা দিয়েছি। কিন্তু আমাদের বই দেওয়া হয়নি। আমাদের স্কুলগুলোয় শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত মোট ১ হাজার ৬৭৬টি বইয়ের চাহিদা ছিল। দেওয়া হয় মাত্র ৫০৪টি বই।’
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুস সালাম বলেন, ‘এক সময় ম্যানুয়ালি বইয়ের চাহিদা নেওয়া হতো। গত বছর থেকে অনলাইনে বইয়ের চাহিদা নেওয়া হচ্ছে। যেটাকে পিইএমইএস (প্রাইমারি এডুকেশন ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম) বলা হয়। তাগাদা দেওয়ার পরও বেসরকারি বিদ্যালয়গুলো অনলাইনে ফরম পূরণ করেনি। ফলে এ সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। আমরা স্কুলগুলোতে বই পাঠানোর চেষ্টা করছি।’