তুরস্কে গত ফেব্রুয়ারি মাসে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে ১২৮ ঘণ্টা পর উদ্ধার হয়েছিল ২ মাস বয়সী একটি শিশু। ধারণা করা হয়েছিল, তার মা আর বেঁচে নেই। কিন্তু তুরস্কের পরিবার ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শিশুটির মাকে পাওয়া গেছে। ডিএনএ পরীক্ষার পর মায়ের কোল ফিরে পেয়েছে শিশুটি।
তুরস্কের কর্তৃপক্ষ জানায়, গত ১১ ফেব্রুয়ারি শিশুটিকে হাতায় শহরে ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত একটি ভবন থেকে উদ্ধার করা হয়। শিশুটিকে উদ্ধারের পর ধ্বংসস্তূপের আশপাশে থাকা মানুষেরা হাততালি দিয়ে আনন্দ প্রকাশ করেন। শিশুটির ছবি ও উদ্ধারের খবর অনলাইনে ছড়িয়ে পড়লে বিশ্বের অনেক মানুষ শিশুটির জন্য সহমর্মিতা জানান। অনেকেই তার উদ্ধারের ঘটনাকে অলৌকিক বলে মন্তব্য করেন। তবে গত শনিবার শিশুটির জন্য আরও ভালো খবর দেয় তুরস্কের পরিবার ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়। আনাদোলু সংবাদ সংস্থা তুরস্কের পরিবার ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বরাতে জানিয়েছে, বর্তমানে প্রায় চার মাস বয়সী শিশুটি গত শনিবার তার মাকে ফিরে পেয়েছে।
আনাদোলুর প্রতিবেদনে বলা হয়, শিশুটির নাম ভেতিন বেগডাস। তার মায়ের নাম ইয়াসমিন বেগডাস। ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার হওয়ার ৫৪ দিন পর মায়ের কোল ফিরে পেল ভেতিন। উদ্ধারের পর তার নাম জানা সম্ভব হয়নি বলে চিকিৎসকেরা তার নাম রেখেছিলেন গাইজেম বা অলৌকিক শিশু। দেশটির পরিবার ও সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডেরিয়া ইয়ানিক শিশুটির মাকে খুঁজে পেতে সাহায্য করেন। মা ও শিশুর ডিএনএ পরীক্ষার পর তা মিলে গেলে শিশুটিকে মায়ের কোলে তুলে দেওয়া হয়।
মন্ত্রী ডেরিয়া ইয়ানিক বলেন, ‘বিশ্বের সবচেয়ে অমূল্য কাজগুলোর মধ্যে একটি হলো এক মায়ের কাছে তাঁর সন্তানকে ফিরিয়ে দেওয়া। এই খুশির অংশ হতে পেরে আমাদেরও অনেক ভালো লাগছে।’
ডেরিয়া ইয়ানিক শিশুটির মায়ের কোলে ফিরে যাওয়ার একটি ভিডিও গতকাল টুইট করেন। ভিডিওতে আদানার একটি হাসপাতালে চিকিৎসারত ইয়াসমিনের কাছে ভেতিনকে তুলে দিতে দেখা যায়। এত দিন শিশুটি আঙ্কারার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। মন্ত্রী ডেরিন বলেন, ‘ভেতিন আমাদেরও সন্তান। শিশুটিকে সব সময় মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সহায়তা করা হবে।’
আনাদোলু জানায়, তুরস্ক ও সিরিয়ার ভূমিকম্পে যে ৫০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে, তার মধ্যে শিশুটির বাবা ও দুই ভাইও রয়েছেন। তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ফেব্রুয়ারি মাসের ওই ভূমিকম্পে তুরস্কে ৪৪ হাজার মানুষ নিহত হন। এ ছাড়া ২ কোটি মানুষ ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।