দৈনিক শিক্ষাডটকম, নওগাঁ : নওগাঁর সাপাহারের সরফতুল্লাহ ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে ৫৯ ভুয়া পরীক্ষার্থীকে দিয়ে দাখিল পরীক্ষা দেয়ানোর ঘটনায় আট মাদরাসা প্রধানের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে কেন্দ্র সচিব মো. মোসাদ্দেক হোসেন বাদী হয়ে এ মামলা করেন। তবে পুলিশ বলছে, ৫৯ ভুয়া পরীক্ষার্থী আটক হওয়ার পরই ওই মাদরাসাগুলো প্রধানরা পালিয়েছেন। তাদের গ্রেফতার করতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
বিষয়টি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে নিশ্চিত করেছেন সাপাহার থানার অফিসার ইনচার্জ পলাশ চন্দ্র দেব। তিনি বলেন, ৫৯ জন ভুয়া পরীক্ষার্থী দিয়ে পরীক্ষা দেওয়ানো মাদরাসাগুলোর প্রধানদের বিরুদ্ধে পাবলিক পরীক্ষা আইন ১২ ও ১৩ ধারায় থানায় মামলা দায়ের করেছেন কেন্দ্রসচিব। তারা পলাতক আছেন। তাই তাদের আটক করা যায়নি। তবে তাদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান চলছে।
জানা গেছে, সদ্য এমপিওভুক্ত সাপাহারের শিমুলডাঙা দাখিল মাদরাসা, মানিকুড়া দাখিল মাদরাসা, বলদিয়াঘাট দাখিল মাদরাসা, নন এমপিও পলাশডাঙা দাখিল মাদরাসা, দেওপাড়া দাখিল মাদরাসা, আলাদিপুর দাখিল মাদরাসা, তুলশিপাড়া দাখিল মাদরাসা, আন্ধারদীঘি দাখিল মাদরাসার প্রধানের বিরুদ্ধে এ মামলা করা হয়েছে।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার দাখিলের আরবি দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষা চলার সময় ওই কেন্দ্র থেকে ৫৯ জন ভুয়া দাখিল পরীক্ষার্থীকে আটক করা হয়। তাদের বয়স ১৮ বছরের নিচে হওয়ায় অভিভাবকদের জিম্মায় মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয় এবং আসল পরীক্ষার্থীদের বহিষ্কার করা হয়।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, আরবি দ্বিতীয় পত্র বিষয়ে পরীক্ষা চলাকালীন কিছু ভুয়া পরীক্ষার্থী এই কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছেন বলে কেন্দ্রসচিব খবর পেয়ে জানালে কক্ষ পরিদর্শকরা খাতা স্বাক্ষর করার সময় বিষয়টি যাচাই করেন। কেন্দ্রে ভুয়া পরীক্ষার্থীদের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে কেন্দ্র সচিবকে জানালে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানান। এরপর সঙ্গে সঙ্গেই তিনি কেন্দ্রে অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র, রেজিস্ট্রেশন কার্ড, ছবিসহ প্রয়োজনীয় সবকিছু যাচাই-বাছাই করেন। যাচাই-বাছাই শেষে এই ৫৯ জন ভুয়া পরীক্ষার্থীকে শনাক্ত করার পর তাদের প্রথমে আটক করা হয়। পরে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়।
এ ঘটনা তদন্তে মঙ্গলবার রাতেই কমিটি গঠন করেছে মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড। জানা গেছে, তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক বোর্ডের প্রকাশনা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড. রিয়াদ চৌধুরী। আর সদস্য হিসেবে আছেন উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ আব্দুস সালাম ও উপ-মাদরাসা পরিদর্শক মো. আকরাম হোসেন।
জানতে চাইলে কেন্দ্রসচিব মো. মোসাদ্দেক হোসেন দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, গোপন সূত্রে জানতে পেরে তাৎক্ষণিকভাবে আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবহিত করি। স্যাররা এসে কক্ষ পরিদর্শকদের সহায়তায় এই ৫৯ জন ভুয়া পরীক্ষার্থীকে শনাক্ত করেন এবং ওই আট মাদরাসা প্রধানের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করার নির্দেশ দেন। এরপর রাতেই আমি বাদী হয়ে ওই আটজন মাদরাসা প্রধানের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করি।