অন্তর্বর্তী সরকরের শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ জানিয়েছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজকে একটি সমন্বিত প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার চেষ্টা চলছে। সেজন্য শিগগির সব্বোর্চ বিশেষজ্ঞ কমিটি করা হবে।
আরো পড়ুন: ছাত্রাবাস খোলার দাবিতে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
তিনি বলেন, উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সবচেয়ে বড় শিক্ষাবিদদের নিয়ে এই কমিট গঠন করা হবে। এই কমিটি কলেজগুলোকে একত্রিত একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেবে। কলেজগুলোকে আরো কী করে স্বায়ত্ত্বশাসন দেয়া যায়, তাদের সুযোগ-সুবিধা ও অবকাঠামো কী করে আরো বাড়ানো যায় সেগুলো নিয়ে কাজ করবে এই কমিটি। কলেজগুলোর সমন্বিত প্রাতিষ্ঠানিক রূপের নাম কী হবে সেটা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে দেয়া হবে।
(২০ নভেম্বর) বুধবার ঢাকা কলেজের ১৮৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, কয়েক বছর আগে অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্তের কারণে সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়েছিলো। এই অধিভুক্ত কলেজগুলোর শিক্ষার্থীরা নানা ভোগান্তির শিকার হয়েছেন। তারা সেশনজট, পরীক্ষা সংক্রান্ত জটিলতাসহ অনেক ধরনের বাধার সম্মুখীন হয়েছেন। তাদের প্রতি সমবেদনা জানাই।
শিক্ষার মান নিয়ে আমাদের অনেক প্রশ্ন, অনেক বৈষম্য আছে। দায়িত্ব গ্রহণের পর আমি বলেছিলাম ঐতিহ্যবাহী সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আলাদা করে একটি স্বতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়ে স্বাধীন সত্ত্বা হিসেবে সংঘটিত করা যায়, সেজন্য একটি কমিটি করেছিলাম। সেই কমিটির প্রাথমিক রিপোর্ট প্রায় শেষ হয়েছে। এরপর আমরা সব্বোর্চ স্তরে বিশেষজ্ঞ কমিটি অতি শিগগির করতে যাচ্ছি, যোগ করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন যে কমিটি গঠন করা হচ্ছে, তা কতো দিনে রিপোর্ট দিচ্ছে বা কীভাবে কাজ করছে তা শিক্ষার্থীরা দেখতে পারবেন। এটার জন্য বসে থেকে কোনো লাভ হবে না। আমাদের সময় অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত, কাজেই প্রাথমিক কাজ শুরু। কমিটি কবে রিপোর্ট দেবে সেটা নিয়ে মাথা ঘামাবো না। আমরা এখন থেকেই নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে কী কী পদক্ষেপ নেয়া যাবে সেগুলো এখন থেকে শুরু করে দেবো।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, যে নাম দাও না কেনো আসল কথা হলো তোমাদের শিক্ষার মানের উন্নতি, শিক্ষার বৈষম্য দূর করা। এখন থেকে আমরা আগের শিক্ষার পরিবেশে ফিরে যেতে চায়। যেখানে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে সুসম্পর্ক থাকবে।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, তোমাদের কোনো অভাব-অভিযোগ থাকে আমাদের এসে জানাবে। আর বিশৃঙ্খলা নয়, আরো রাস্তাঘাট ব্লক নয়। বর্তমানে যারা এই শিক্ষাব্যবস্থায় আছি সেটা যেনো কোনোভাবেই বিঘ্নিত না হয়। বরং যে সমস্যাগুলো আছে এই অন্তর্বর্তী সময়ে সেটা দূর করতে সচেষ্ট হতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমি আলোচনা ও অনুরোধ করবো। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শিক্ষার মান উন্নয়নে যতোটা পারে যথাসাধ্য চেষ্টা করবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের বিষয়ে তিনি বলেন, এই নতুন সময়ে অনেক অস্থিরতা গিয়েছে। ৫৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় সম্পূর্ণ অভিভাবকহীন অবস্থায় আমারা পেয়েছি। সেগুলোর প্রত্যেকটিকে কর্তৃপক্ষ নিয়োজিত করা হয়েছে। যাদেরকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, তারা সবাই যোগ্য। বাংলাদেশের ইতিহাসে এতো যোগ্য, এতো প্রতিভাবান মানুষেরা কখনো বিশ্ববিদ্যালয় প্রধানের দায়িত্ব দেয়া হয়নি, যোগ করেন তিনি।