নওগাঁর সাপাহারের তেঘরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক-প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক মোসাঃ খাদিজাতুল কোবরা ৭ বছর সময়ে মাত্র ২৭ মাস বিদ্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন। এ বঞ্চিত হচ্ছেন শিশু শিক্ষার্থীরা। তার পরিবর্তে অন্যান্য শিক্ষকরা অতিরিক্ত পাঠদানে হিমশিম খাচ্ছেন।
স্থানীয় ও প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা যায়, বিভাগীয় শহর রাজশাহীতে বসবাসরত একজন এমবিবিএস ডাক্তারের স্ত্রী শিক্ষিকা খাদিজাতুল কোবরা। সে গত ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ জানুয়ারি ওই বিদ্যালয়ে চাকরিতে যোগদান করেন। যোগদান করার পর ওই বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর চিকিৎসার আবেদন করে ছুটিতে যান। এরপর বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে কোনো তোয়াক্কা না করে নিজের খেয়াল খুশিমত বিভিন্ন সময়ে দফায় দফায় চিকিৎসা ছুটির আবেদন করেন। এখন পর্যন্ত তিনি ৩২৯ দিন মেডিক্যাল ছুটি নিয়েছেন। এছাড়াও তিনি গত বছরের ১৩ মে থেকে প্রধান শিক্ষকের অনুমোদন ছাড়াই বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত আছেন।
বিদ্যালয়ে যোগদানের পর ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ১ জানুয়ারি থেকে ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ জুন পর্যন্ত ডিপিএড প্রশিক্ষণে ছিলেন। করোনা মহামারির জন্য প্রায় দেড় বছর সারা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিলো।
ওই শিক্ষকের এসব অনিয়মের বিষয়ে জানিয়ে প্রধান শিক্ষক ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষের কাছে কয়েক দফা আবেদনও করেন। এরপর ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হলে সে জেলা শিক্ষা অফিসারের অনুমতি নিয়ে প্রতিষ্ঠানে যোগাদান করে পরের দিন থেকে অনুমতি না নিয়ে এ পর্যন্ত আর বিদ্যালয়ে আসেননি।
এ বিষয়ে জানতে শিক্ষক খাদিজাতুল কোবরা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমার বিষয়ে যা কিছু জানার তা জেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে থেকে জেনে নেন। বলে মুঠোফোনের লাইন কেটে দেন।
প্রধান শিক্ষক জেসমিন আক্তার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ওই শিক্ষক যোগদানের পর ৮ মাসের মত চাকরি করার পর মেডিক্যাল ছুটির জন্য আবেদন করেন। তার আবেদনে আমি সুপারিশ করি। এরপর সে আবারও আবেদন করেন তখনও আমি সুপারিশ করি। এরপর সে আবেদন করলে আমি আর সুপারিশ করিনি। তারপর তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হলে সে গত জানুয়ারি মাসের ২৫ তারিখে বিদ্যালয়ে যোগদান করেন এরপর তিনি পরের দিন ২৬ জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত তিনি বিদ্যালয়ে আসেননি।
তিনি কত দিন বেতন ভাতা নিয়েছেন দৈনিক শিক্ষা ডটকমের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সম্ভবত ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত বেতনভাতা উত্তোলন করেছেন। তিনি কোন মাস পর্যন্ত বেতন ভাতা উত্তোলন করেছেন তা সঠিকভাবে বুধবার অফিস টাইমে জানাতে পারবো।
সাপাহার উপজেলা শিক্ষা অফিসার তৃষিত কুমার চৌধুরীর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এ সময়ের মধ্যে পিটিআই ট্রেনিং ও বিভিন্ন সরকারি ছুটিও রয়েছে। তবে তিনি দীর্ঘ দিন যাবত ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত রয়েছেন যা একজন শিক্ষকের কাছ থেকে কাম্য নয়। আমরা তার বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি, তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা চলছে।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।