৭০ বছর বয়সে বিয়ের কারণ জানালেন সেই অধ্যাপক - দৈনিকশিক্ষা

৭০ বছর বয়সে বিয়ের কারণ জানালেন সেই অধ্যাপক

বাগেরহাট প্রতিনিধি |

৭০ বছর বয়সে এসে বিয়ে করার কারণ জানালেন বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার জিগিরমোল্লা গ্রামের কলেজশিক্ষক হাওলাদার শওকত আলী। বিবাহিত জীবনে স্বাধীনতার খর্ব হয় বলে এত বছর বিয়ে করেননি তিনি। তবে জীবনের শেষ সময়ে এসে একাকিত্ব অনুভব করায় বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন। 

জীবনের মূল্যবান সময় শিক্ষকতা ও ভাইবোনকে মানুষ করার কাজে ব্যয় করেছি উল্লেখ করে হাওলাদার শওকত আলী বলেন, ‘রামপাল সরকারি কলেজে ৩৩ বছর শিক্ষকতা করেছি। ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে অবসরে যাই। জীবনের মূল্যবান সময় শিক্ষকতা ও ভাইবোনকে মানুষ করার কাজে ব্যয় করেছি। সংসারের হাল ধরতে এবং ভাইবোনকে প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে বিয়ে করিনি।’

 

বিবাহিত জীবনে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব উল্লেখ করে অবসরপ্রাপ্ত এই শিক্ষক বলেন, ‘বিবাহিত জীবনে নিজস্ব বলতে কিছুই থাকে না। নারী-পুরুষ দুই জনের ক্ষেত্রেই এটি হয়। একা থাকলে যতটা স্বাধীনভাবে কাজ করা যায়, তা বিবাহিত জীবনে করা যায় না। আর স্বাধীনতা খর্ব হলে নিজের ও সমাজের জন্য কিছুই করা যায় না। বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় সবচেয়ে বেশি স্বাধীনতা খর্ব হয় বিবাহিত জীবনে। স্বাধীনতা খর্ব হওয়ার ভয়ে এতদিন বিয়ে করিনি। এই সময়ে স্বাধীনভাবে নিজের ভাইবোনকে পড়াশোনা করিয়ে প্রতিষ্ঠিত করেছি। আরও অনেকের ছেলেমেয়ের পড়াশোনার খরচ চালিয়েছি, অনেক ছেলেমেয়ের চাকরির ব্যবস্থা করেছি। কিন্তু বিবাহিত হলে সংসারের মায়ায় পড়ে এসব কাজ করতে পারতাম না। আবার তখন হয়তো স্ত্রী-সন্তান করতে দিতো না। এসব বিষয় চিন্তা করে বিয়ের কথা বাদ দিয়েছিলাম। সেইসঙ্গে চিরকুমার থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু জীবনের শেষ সময়ে এসে দেখলাম খুব একাকিত্ব লাগছে। তাই ভাইবোনের চাপে পড়ে শেষ পর্যন্ত বিয়ে করেছি। গত ১৮ মার্চ আমাদের বিয়ে হয়েছে। এরপর কুয়াকাটায় হানিমুনে গেছি। সেখানে তিন দিন থেকে বাড়িতে ফিরে এসেছি আমরা।’

বিবাহিত জীবন খুবই চমৎকার যাচ্ছে উল্লেখ করে শওকত আলী বলেন, ‘এখনও শ্বশুরবাড়ি যাইনি। কারণ আমার বিয়ে অনেকটা বিরল ঘটনার মতো। এই বয়সে কারও বাড়ি গিয়ে পাত্রী দেখা, বিয়ে করা ছিল কঠিন আবার হাস্যকরও। এজন্য মেয়েপক্ষকে বলেছি, আমি আপনাদের বাড়ি গিয়ে বিয়েতে বসতে পারবো না। সমাজের লোকে হাসবে। তাই মেয়েপক্ষকে আমার বাড়িতে নিয়ে এসেছি। দুই পক্ষের লোকজনকে নিয়ে এখানেই বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। এরই মধ্যে স্ত্রী তার শ্বশুরবাড়ি গেছে। আমি এখনও যাইনি। আরও কয়েকদিন গেলে একসঙ্গে দুই বাড়িতে যাওয়ার কথা ভাবছি।’

এর আগে গত ১৮ মার্চ মোংলার শাহেদা বেগমের (৩৫) সঙ্গে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হন হাওলাদার শওকত আলী। ১০ লাখ এক টাকা দেনমোহরানায় নগদ পাঁচ লাখ টাকা উশুলে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও দুই পরিবারের লোকজনের উপস্থিতিতে এ বিয়ে হয়।

শওকত আলীর ভাই আবদুল হালিম খোকন বলেন, ‘তিনি আমাদের বড় ভাই, আমরা তার কাছে মানুষ হয়েছি, সারাটা জীবন তিনি আমাদের সুখে-দুঃখে বটবৃক্ষের মতো আগলে রেখেছেন। বর্তমানে আমরা নিজেদের কর্ম এবং ব্যবসার কাজে ব্যস্ত থাকি। ফলে আমাদের বড় ভাই অবসরে আসার পর অনেকটা একাকিত্ব বোধ করছিলেন। তার এই একাকিত্ব দূর করতে ও তাকে দেখভাল করতে একজন সঙ্গিনী খুবই দরকার হয়ে পড়ে। তাই আমরা তাকে বিয়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করলে তিনি একপর্যায়ে রাজি হন। এরপর মোংলা উপজেলার মিঠাখালী ইউনিয়নের এক কন্যাসন্তানের জননী (বিধবা) শাহেদা বেগমের সঙ্গে বিবাহ সম্পন্ন করি।’

কনের আগের সংসারের মেয়েটির দায়িত্ব আমার ভাই নিয়েছেন জানিয়ে আবদুল হালিম আরও বলেন, ‘নবদম্পতি বর্তমানে সুখে-শান্তিতে সংসার করছেন। তারা সপরিবার হজে যাবেন এবং তাদের জন্য দোয়া করবেন সবাই।’

যাত্রাবাড়ীতে অবরোধ, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ - dainik shiksha যাত্রাবাড়ীতে অবরোধ, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ কমপ্লিট শাটডাউন ঘিরে কাউকে সহিংসতা করতে দেওয়া হবে না: কাদের - dainik shiksha কমপ্লিট শাটডাউন ঘিরে কাউকে সহিংসতা করতে দেওয়া হবে না: কাদের ‘ছাত্রলীগ করে, ওকে মেরে ফেল’ - dainik shiksha ‘ছাত্রলীগ করে, ওকে মেরে ফেল’ সারাদেশে কমপ্লিট শাটডাউন চলছে - dainik shiksha সারাদেশে কমপ্লিট শাটডাউন চলছে সারাদেশে ২২৯ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন - dainik shiksha সারাদেশে ২২৯ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.00514817237854