দেশের শতকরা ৯২ ভাগ মানুষ মানসিক রোগের কোন চিকিৎসা গ্রহণ করেন না বলে ষষ্ঠ বাংলাদেশে ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি সম্মেলনে উঠে এসেছ। শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে শুরু হওয়া ‘কমিউনিটিভিত্তিক মানসিক স্বাস্থ্য: বাংলাদেশে মানসিক স্বাস্থ্য সেবার ব্যবধান কমিয়ে আনার চাবিকাঠি’ শীর্ষক ওই সম্মেলন মূল প্রবন্ধে বিষয়টি উঠে।
মূল প্রবন্ধে বাংলাদেশ ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ড. মো. শাহানূর হোসেন বলেন, বাংলাদেশের ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ প্রাপ্ত বয়স্ক এবং ১২ দশমিক ৬ শতাংশ শিশু-কিশোর মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছে। দেশের ৯২ ভাগ লোক মানসিক রোগের কোনো চিকিৎসা গ্রহণ করে না। এই বিশাল জনগোষ্ঠীর মানসিক স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে দেশে মানসিক স্বাস্থ্য পেশাজীবীর অপ্রতুলতাও রয়েছে।
চার দিনের এ সম্মেলনের উদ্বোধনী দিনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য স্মার্ট ফোন, ডিজিটাল প্রযুক্তি ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহার রোধ এবং মানসিক চিকিৎসার ক্ষেত্রে সামাজিক বাধা দূর করতে হবে।
তিনি মানসিক স্বাস্থ্য সেবা খাতের উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা পালনের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, দেশের কমিউনিটি পর্যায়ে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দিতে তাদের প্রশিক্ষিত জনশক্তি হিসেবে গড়ে উঠতে হবে। তিনি বলেন, ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেয়ার মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা খাতের পেশাজীবী সংকট নিরসন করা সম্ভব। দেশের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোও এক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে।
তিনি আরো বলেন, মানসিক চাপ ও বিষণ্ণতা নিয়ন্ত্রণে সবাইকে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। অবহেলিত, বঞ্চিত ও হতাশাগ্রস্ত মানুষকে সমাজ ও কর্মের মধ্যে সম্পৃক্ত করতে হবে। মানসিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সামাজিক দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি করার ওপরও তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ কামরুজ্জামান মজুমদারের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নন-কমিউনিকেবল ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগামের লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. মো. রোবেদ আমিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জীব বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এ কে এম মাহবুব হাসান এবং ব্রিটিশ সাইকোলজিক্যাল সোসাইটির সাবেক সভাপতি ড. গ্রাহাম পাওয়েল, বিশ্ববিদ্যালয় ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান মিসেস জোবেদা খাতুনসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।