‘আফনারা আমার বইনেরে আইনা দেন, আমার বোইন ভার্সিটির শিক্ষক হইব। আমার বোইন এভাবে মরতে পারে না!’ এভাবেই বিলাপ করছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সুইটি আক্তারের বড় ভাই জহিরুল ইসলাম। বোনকে হারিয়ে পাগলপ্রায় তিনি।
রোববার (১৯ মার্চ) পদ্মা সেতুর এক্সপ্রেসওয়ের মাদারীপুর জেলার শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় ঢাকাগামী ইমাদ পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস খাদে পড়ে যে ১৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন তার মধ্যে সুইটি আক্তার একজন।
সুইটি আক্তার গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মাসুদ মিয়ার ছোট মেয়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন এক বুক স্বপ্ন নিয়ে। প্রথম বর্ষ শেষ করে দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যয়ন করছিলেন তিনি। কয়েক দিন আগে বাড়িতে এসেছিলেন বেড়াতে। সকালে ক্যাম্পাসের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন ইমাদ পরিবহনে। ক্যাম্পাসে ফিরে বাড়িতে ফোন করে জানানোর কথা ছিল। বাড়ির লোক ঠিকই জেনেছে তার কথা; কিন্তু ক্যাম্পাসে পৌঁছার কথা নয় বরং পরপারে যাওয়ার কথা।
সুইটির বড় ভাই জহিরুল বলেন, ‘আমার বোন অনেক মেধাবী ছাত্রী। তার স্বপ্ন ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হবে। প্রথম বর্ষে ভালো রেজাল্ট করেছিল; কিন্তু এ দুর্ঘটনায় সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল।’
জহিরুল টেলিভিশনে দুর্ঘটনার সংবাদ দেখে ছুটে আসেন শিবচরের কুতুবপুরে। তখন সুইটির লাশ শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রাখা ছিল। সন্ধ্যার পর জহিরুলের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়।
গতকাল সকাল ৭টার দিকে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ইমাদ পরিবহনের একটি বাস পদ্মা সেতুর আগে এক্সপ্রেসওয়ের শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়। এ ঘটনায় ১৯ জনের মৃত্যু হয়। এতে আহত আরও ১০ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।