‘আর পাই নাই তারে, দুনিয়াত্তে নাই হয়া গেছে’ - দৈনিকশিক্ষা

‘আর পাই নাই তারে, দুনিয়াত্তে নাই হয়া গেছে’

দৈনিক শিক্ষাডটকম, জবি |

'ও আমাদের সাথে বাসায় শোয়া ছিলো। জুমার নামাজ পড়ে আইসা, খায়া শুইয়া ছিলো। আমার ঘুম আইসা পড়ছিলো। ওর হয়তো ঘুম আসে নাই বা কেউ কি ডাইকা নিয়া গেছে কি না! ঘুম থেইকা উইঠা কেবল বসছি, এর মধ্যেই ফোন আসছে…এরপর তো ছোটাছুটি। হাসপাতালে যাইয়া আর পাই নাই তারে, দুনিয়াত্তে নাই হয়া গেছে।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী আহসান হাবিব তামিমের বাবা আব্দুল মান্নান। গত ১৯ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সংঘটিত সহিংসতায় মিরপুর-১০ গোল চত্বরে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন তামিম। 

আব্দুল মান্নান বলেন, আমার ছেলেটার স্বপ্ন ছিলো একটা সরকারি চাকরি করবে, প্রতিষ্ঠিত হবে। পরিবারে মুখে হাসি ফোটাবে। ওর বড় ভাই কষ্ট করে পড়াশোনা করাইলো। তামিম চাইতো ওর ছোটো ভাইটারে মানুষ, প্রতিষ্ঠিত করবে যেনো দেশের একটা গৌরব হয়ে দাঁড়ায়। আমার ছেলেটার স্বপ্ন আর পূরণ হলো না।’
তামিমের পরিবার জানায়, ছোটো থেকেই তামিম ছিলেন চঞ্চল প্রকৃতির। ছিলেন মেধাবী আর সাহসী ছিলেন তামিম। বড় হয়েছেন ঢাকাতেই। যুক্ত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গেও। দেশের জন্য, পরিবারের জন্য ভালো কিছু করার স্বপ্ন ছিলো তার।

 এদিকে ছেলে হারানোর শোকে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন তামিমের মা রাজিয়া সুলতানা। কেউ ফোন দিলে, তামিমের নাম শুনলেই উচ্চস্বরে কেঁদে উঠছেন তিনি। কাঁদতে কাঁদতে তামিমের মা বলেন, যাওয়ার সময় আমার ছেলেটা আমাকে বলেন, মা আমি যাবো আর আসবো। মারামারিতে যাবো না।এখনই আসছি। কিন্ত আমার ছেলেটা ফিরলো লাশ হয়ে। 

জানা যায়, ঢাকায় তামিমের বাবা কাজ করেন মোটর মেকানিকের। পরিবারের সবাইকে নিয়ে থাকতেন একটি ভাড়া বাসায়। দরিদ্র পরিবারে বেড়ে ওঠা তামিম স্বপ্ন দেখতেন পরিবারের জন্য কিছু করার। তিন ভাইয়ের মধ্যে তামিম ছিলেন দ্বিতীয়। বড় ভাইও বাবার সঙ্গেই করেন মেকানিকের কাজ। ছোট ভাইয়ের বয়স মাত্র পাঁচ বছর। তাদের গ্রামের বাড়ি লক্ষীপুর জেলার চাটখিল উপজেলায়।

এদিকে তামিমের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে বিশ্ববিদ্যালয়েও। তামিমের বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, তামিমের অকাল মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। বিভাগের পক্ষ থেকে তামিমের পরিবারের পাশে থাকবো আমরা। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক ড.আল আমিন বলেন, আমরা তামিমের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তাদেরকে সহযোগিতা করার প্রচেষ্টা চলমান। বিভাগ ও প্রক্টরিয়াল বডি থেকে তার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সহযোগিতা করবে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.সাদেকা হালিম বলেন, তামিমের পরিবারের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করেছি। কথা বলেছি। গনিত বিভাগের পক্ষ থেকে ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তার পরিবারকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।

 

মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! - dainik shiksha মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0054659843444824