পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগে মিউজিক্যাল চেয়ার খেলা চলছে বলে মন্তব্য করেছেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ওম প্রকাশ মিশ্র। পশ্চিমবঙ্গের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে চরম নৈরাজ্য চলছে বলে মনে করছেন রাজ্যের সাবেক উপাচার্যরা। উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের সঙ্গে কোনো আলোচনা ছাড়াই আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস নিজের খুশিমত অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ করছেন। পরিবর্তনও করছেন। অভিযোগ, নতুন উপাচার্য নিয়োগের আগে বর্তমান উপাচার্যদেরও কোনো কিছু জানানো হচ্ছে না।
গতকাল সোমবার আচমকাই উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে রাজ্যপাল ওই বিশ্ববিদ্যালযেরই কলা,বাণিজ্য ও আইন বিভাগের ডিন রথীন বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়োগ করেন রাজ্যপাল। এক ঘণ্টার মধ্যে দায়িত্বভার নেয়ারও নির্দেশ দেয়া হয়। অথচ বর্তমান উপাচার্যকে এ ব্যাপারে কোনো কিছু জানানো হয় নি।
গত ২২ মে সঞ্চারী রায় মুখোপাধ্যায়কে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ করা হয়েছিলো। তিনি বলেন, নতুন উপাচার্য নিয়োগের খবর জেনেছি। কিন্তু আমাকে কোনো কিছু জানানো হয়নি। একই ঘটনা ঘটেছে আবুল কালাম আজাদ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও। গত ২৭ এপ্রিল সেখানে উপাচার্য নিয়োগ করা হয়েছিল ইন্দ্রনীল মুখোপাধ্যায়কে। কিন্তু গত ১৪ জুলাই তিনি যখন আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করছিলেন তখনই তিনি খবর পান তার জায়গায় নতুন একজনকে উপাচার্য নিয়োগ করা হয়েছে। তাকেও আগে কিছু জানানো হয়নি। নতুন উপাচার্য যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গৌতম মজুমদার সেদিনই দ্রুততার সঙ্গে দায়িত্বভার বুঝে নিয়েছিলেন। এদিকে ১৭ জুলাই দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যায়েও আচমকাই নতুন উপাচার্য হিসেবে অধ্যাপক দেবব্রত বসুকে নিয়োগ করেন রাজ্যপাল। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক সুশান্ত চক্রবর্তীকে নিয়োগ করা হয়েছে। গত সোমবারই তিনি দায়িত্বভার নিয়েছেন।
এর আগে ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজ্যপালের অন্তবর্তী উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যের শিক্ষা দপ্তরের সঙ্গে বিরোধ তৈরি হয়েছিলো। সাবেক উপাচার্যরা অভিযোগ করেছেন, আচার্য ইচ্ছেমত অন্তবর্তী উপাচার্য নিয়োগ করছেন। কোনো নিয়ম নীতি মানা হচ্ছে না। কয়েকদিন আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ের রীতিকে লঙ্ঘন করে শিক্ষাবিদের পরিবর্তে একজন সাবেক বিচারপতিকে তিনি রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ করেছেন।অথচ রাজ্যের ৩১ সরকারি বিশ্ববিদ্যালযের কোনোটিতেই স্থায়ী উপাচার্য নেই। কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তবর্তী উপাচার্য দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজসহ বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ আটকে রয়েছে।