আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেছেন, ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিলো জিয়াউর রহমান। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তার বঙ্গভবনে গিয়ে গভীর রাতে বিচারপতি সায়েমের বুকে পিস্তল ঠেকিয়ে অবৈধভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছিলো জিয়া। সেই জিয়াউর রহমানের বিএনপি আজ গণতন্ত্রের কথা বলে, গণতন্ত্র উদ্ধারের কথা বলে। গণতন্ত্র হরণকারীদের মুখে গণতন্ত্রের কথা মানায় না।
শুক্রবার যাত্রাবাড়ী, কাজলা ব্রিজ এলাকায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের উদ্যোগে আয়োজিত শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
শান্তি সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল ও ঢাকা-৫ আসনের সংসদ সদস্য মনিরুল ইসলাম মনু। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানার সভাপত্বি আয়োজিত অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজা।
এমপি মির্জা আজম আরো বলেন, ১৯৮১ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ মে আগ পর্যন্ত জিয়াউর রহমান যতদিন বেঁচে ছিলো ততদিন এদেশে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়েছে। ১৯৯১-৯৬ এবং ২০০১-২০০৬ খ্রিষ্টাব্দে বিএনপি ক্ষমতায় থেকে অত্যাচার-নির্যাতন, গুম, খুনের মাত্রা আরো বাড়িয়ে দিয়েছিলো। আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছে। ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দের ২১শে আগস্টে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে আইভী রহমানসহ ২৪ জন নেতাকর্মীকে হত্যা করেছিলো। তাদের সেই সময়ে দুর্বিসহ দিন কাটিয়েছে আওয়ামী লীগ, যুবলীগের নেতাকর্মীরা। ঘরে ঘুমাইতে পারেনি, ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারতো না, প্রতিটি নেতা-কর্মীর নামে ডজন ডজন মামলা দিয়েছিলো। আমার নামেও প্রায় তিন ডজন মিথ্যা মামলা দায়ের করেছিলো। আর আজ বঙ্গবন্ধুকন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা বহাল তবিয়তে রয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্য করছে, আন্দোলন করছে। আওয়ামী লীগ তাদেরকে বাধা দেয় না। এটাই গণতন্ত্র। এটাই বঙ্গবন্ধুকন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার মানবিকতা।
তিনি আরো বলেন, টানা ১৫ বছর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকায় সর্বক্ষেত্রে উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। মাথা পিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে, মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে গিয়েছে, শিক্ষার মান বৃদ্ধি পেয়েছে, নারীর ক্ষমতায়ন বৃদ্ধি পেয়েছে, সাধারণ মানুষ ভালো আছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন বাস্তবতা, আমাদের লক্ষ্য স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ।
তিনি যুবলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, অতীতে যেভাবে রাজপথে থেকে ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেছেন, সামনের দিনগুলোতেও একইভাবে রাজপথে থেকে বিএনপি-জামায়াতের সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনাকে আবারো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় থাকলে দেশে অগ্নিসন্ত্রাস, খুন, গুম, রাহাজানি বৃদ্ধি পায়। সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তা থাকে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আমরা জনগণের পাশে আছি, তাদের বিপদে-আপদে সহায়তা করছি, সাধারণ মানুষের জানমালের নিরাপত্তায় নিয়োজিত। আর সেই কারণেই আজকের এই শান্তি সমাবেশ। বিএনপি-জামায়াত জঙ্গিগোষ্ঠী যেন মানুষের জানমালের ক্ষতি ও শান্তি নষ্ট করতে না পারে সেদিকে যুবলীগের নেতাকর্মীদের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। যেখানেই বিএনপি-জামায়াত অন্যায়-অত্যাচার করবে সেখানেই কঠোরভাবে প্রতিহত করতে হবে।
শান্তি সামাবেশে আরো বক্তব্য দেন বক্তব্য রাখেন ঢাকা-৫ আসনের সংসদ সদস্য মনিরুল ইসলাম মনু, যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. হেলাল উদ্দিন, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ। সমাবেশে যুবলীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মো. সাদ্দাম হোসেন পাভেল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পাদক মো. শামছুল আলম অনিকসহ কেন্দ্রীয় মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।