‘হল কি তোর বাপের, থাকতে হলে আমাকে টাকা দিয়ে থাকতে হবে’ - দৈনিকশিক্ষা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়‘হল কি তোর বাপের, থাকতে হলে আমাকে টাকা দিয়ে থাকতে হবে’

রাবি প্রতিনিধি |

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আবাসিক হলে এক শিক্ষার্থীকে মারধর করে হলের সিট থেকে নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে। রোববার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হবিবুর রহমান হলে এ ঘটনা ঘটে।

এ ছাড়া গত ১২ মার্চ ওই ছাত্রলীগ নেতা প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন বলে ভুক্তভোগী মতিহার থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।

অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার নাম মো. মনিরুল ইসলাম ওরফে স্বপন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম ফয়সাল আহম্মেদ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ এবং শহীদ হবিবুর রহমান হলের ৪০৪ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী। তিনি একজনের নাম উল্লেখসহ ২০ থেকে ২৫ জনকে অভিযুক্ত করেছেন।

লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগী এই শিক্ষার্থী উল্লেখ করেন, ‘গত ১২ মার্চ রাত সাড়ে ৮টার দিকে হলের ৪০৪ নম্বর কক্ষে মনিরুল ইসলাম এসে তাকে বলেন ‘তুমি এখন রুম থেকে বের হয়ে চলে যাও, না গেলে তোমাকে প্রাণে মেরে ফেলব’। ‘তোমাকে বাঁচানোর মতো কেউ নাই’ বলে অন্য একটি ছেলের বিছানাপত্র তার কক্ষে রেখে চলে যান।

অভিযোগে বলা হয়, এরপর রোববার (২৬ মার্চ) রাত সাড়ে ৮টার দিকে আবার আসেন তিনি। এ সময় তার সঙ্গে ২০ থেকে ২৫ জন আসেন। স্বপন কক্ষে এসে তাকে বলেন, ‘তোকে না রুম থেকে বের হয়ে যেতে বলেছিলাম? তুই এই রুমে এখনো কী করিস? হল কি তোর বাপের, আমার এই ব্লকে থাকতে হলে আমাকে টাকা-পয়সা দিয়ে থাকতে হবে।’ এ বিষয়ে প্রতিবাদ করলে তিনি তার পোশাক ধরে কক্ষ থেকে টেনেহেঁচড়ে বের করার চেষ্টা করেন। বের হতে না চাইলে তারা তাকে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করেন। মনিরুল ইসলাম তার ডান হাতে লাঠি দিয়ে সজোরে আঘাত করেন। এতে তার ডান হাতে আঘাত লাগে। পরে তারা তার বিছানাপত্র বের করে বাইরে ফেলে দেন।’

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ফয়সাল আহমেদ বলেন, ‘আগে আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। পরে গতকাল (রোববার) স্বপন কয়েকজন নিয়ে এসে আমাকে মারধর করে এবং আমার কক্ষে অন্যজনের বেডপত্র রেখে যায়।’

অভিযোগের বিষয়ে মনিরুল ইসলাম স্বপন বলেন, ‘আমি কাউকে মারধর করিনি। আমি আগামী সম্মেলনের প্রার্থী তাই আমার বিরুদ্ধে কারো রাজনৈতিক হিংসা থেকে এসব অভিযোগ তোলা হচ্ছে। অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।’

তিনি আরো বলেন, ‘ওই ছেলে হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমানের (অপু) মাধ্যমে উঠেছে। হয়তো টাকাপয়সা দিয়েছে। তারা অভিযোগ করেছে, তদন্ত হোক। এ ঘটনার পর আমি নিজেও থানায় মানহানির অভিযোগ করব।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমানকে (অপু) একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেনি। 

এ বিষয়ে নগরের মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ‘ফয়সাল নামের একজন শিক্ষার্থীর অভিযোগ পেয়েছি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ ঘটনা হওয়ায় আমরা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা এ ঘটনায় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছে। আমরাও তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’

সার্বিক বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমি বিষয়টি জেনেছি। ওই কক্ষের সমস্যারও সমাধান করেছি। ফয়সাল আহমেদের রুমে যাকে জোর করে তোলা হয়েছে তাকে তার নির্ধারিত সিটে চলে যাওয়ার জন্য বলেছি।

তবে মারধরের ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে তিনি বলেন, আমার কাছে এ ঘটনায় কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। ফলে আমি অফিসিয়াল কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারছি না।

যেসব চাকরির পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha যেসব চাকরির পরীক্ষা স্থগিত কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার - dainik shiksha কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসছে সরকার উত্তরায় গুলিতে ২ শিক্ষার্থী নিহত - dainik shiksha উত্তরায় গুলিতে ২ শিক্ষার্থী নিহত ছাত্রলীগ আক্রমণ করেনি, গণমাধ্যমে ভুল শিরোনাম হয়েছে - dainik shiksha ছাত্রলীগ আক্রমণ করেনি, গণমাধ্যমে ভুল শিরোনাম হয়েছে সহিংসতার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন - dainik shiksha সহিংসতার দায় নেবে না বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জবিতে আজীবনের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আশ্বাস প্রশাসনের - dainik shiksha জবিতে আজীবনের জন্য ছাত্র রাজনীতি বন্ধের আশ্বাস প্রশাসনের মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ জানালেন পলক - dainik shiksha মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের কারণ জানালেন পলক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0029129981994629